প্রকাশিত : » ২৫ অক্টোবর ২০২০, সময়: » ৬:১০ অপরাহ্ণ, পঠিত: » 444 views
ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ
পরিবারের ব্যাপক আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন আল মামুন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের বিশাউতি গ্রামে নিজ ঘরের বর্গার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
আল মামুন ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার মা-বাবা ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করেন এবং পরিবারে দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়। আল মামুন কলমাকান্দা সরকারি ডিগ্রী কলেজের এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলার বিশরপাশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. আবু সায়েম। তিনি বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানান উপজেলার বিশরপাশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. আবু সায়েম।
মৃত্যুর আগে আল মামুন তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখে গেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপা। সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আমি আপনার রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কলমাকান্দা উপজেলা শাখার একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে অন্যায়ের প্রতিবাদ, সৎ সাহস ও বুকে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ ধারণ করে দেশ ও সমাজকল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি সবসময়। কখনো নিজের ভবিষ্যৎ ও পরিবারের কথা চিন্তা করিনি।
এমতাবস্থায় ব্যাপক আর্থিক সংকট ও পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সংসারের দায়িত্ব নেওয়া পাহাড় সমতুল্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি দয়া করে আমার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করতেন? তাহলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আমার পরিবারের এত কষ্টে দিন কাটত না, কিছুটা হলেও সুখের সন্ধান পেত।’
রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান তাহেরা খাতুন বলেন, ‘ছেলেটির বাবা চা বিক্রেতা এবং বোন গার্মেন্টস কর্মী। সে (আল মামুন) নিজের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ও টিউশনি করে যে টাকা সঞ্চয় করে তা দিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তার এলাকায় বিশাউতি, রায়পুর ও গজারিকান্দাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের অসহায় ও হতদরিদ্র মানুসের সেবা করে যাচ্ছিল। ছেলেটির নিজের বলতে কিছু নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেটি দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ এসব উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পেলে অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের সেবা করার জন্য আরও উৎসাহিত হবে এ মর্মে আবেদন করেছিলাম।’