সুগন্ধার বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ। গতকাল রাত তিনটার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা এমভি অভিযান ১০ লঞ্চটি ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর মধ্যে চাঁদপুর ও বরিশাল যাত্রী উঠানামা করেছে। তারপর যাত্রী নিয়ে ঝলকাঠির সুগন্ধা নদীতে আসলে লঞ্চে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর ভায়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসা এক যাত্রী জানান, ভাবছিলাম আমি আর বাঁচবো না। পুরো লঞ্চে আগুন ছড়িয়ে যায়। পরে নদীতে লাফ দেই,পরে দিয়াকুল গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন। তারাই আমাকে উদ্ধার করে গরম কাপড় দেন। পরে সকালে তাকে ট্রলারে করে ঝলাকাঠি শহরে পাঠানো হয়।
“আমরা দোয়া কালাম পড়ে রেডি হইছি, বাচ্চারে কোলে নিছি, আর কোনোদিন দেখা হবে না। কেয়ামতের দিন দেখা হইলে বাবা, তোমারে ভালো রেজাল্টের জন্য কত মারছি, তুমি আমারে ক্ষমা কইরে দিও। আমার ছেলে অমারে ধইরে বসছে চুমু দিয়া, বলে ‘আম্মু, তোমারে ছাড়া বাঁচব না’। ও লাফ দিছে, আমি বোরকা ছিড়ড়া ঝাঁপ দিছি। আমি মনে হয় ৫ ফুট না কয়ফুট গেছি জানি না, হঠাৎ কইরা ভাইসা উঠছি, সাঁতার দিয়া ছেলেরে ধরছি। শেষ পর্যন্ত নদীতে লাফ দিয়ে বেঁচে যান ওই নারী ও তার ছেলের।
আবদুল্লাহ নামের এক যাত্রী জানান, আরও অনেকের মত তিনিও ঝঁপিয়ে পড়েছিলেন। তবে কেবিনের যাত্রীদের অনেকে সে সুযোগ পাননি। নদী তীরের বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তীরে উঠতে পেরে প্রাণে বেঁচে গেছেন। তবে লাফিয়ে পড়া নারী আর শিশুরা সবাই উঠেতে পেরেছেন কি না, তিনি নিশ্চিত নন।