আজ - বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১:১৪

ঢাকা বিমান বন্দরে যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ হাবিব ৩০ লাখ টাকা সহ আটক।

যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিবকে অবৈধ ২০লাখ টাকাসহ ঢাকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করলেও পরে পদস্থ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান। কিন্তু অর্থের উৎস ডকুমেন্ট দিতে না পারায় ২০ লাখ টাকা ইমিগ্রেশন পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেন। তবে উপযুক্ত প্রমাণ ও ব্যাংক একাউন্টের কাগজ জমা দিয়ে টাকা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, গত ১৯নভেম্বর সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ এর কিছু মালামাল কেনার জন্য বিমানযোগে ঢাকায় যান। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকিং করার সময় তার ব্যাগে ২০লাখ টাকার অস্তিত্ব পান। তখন ইমিগ্রেশন পুলিশ অধ্যক্ষকে পাশের একটি রুমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় টাকার বিপরীতে কোনো প্রমাণপত্র ও উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারার কারণে টাকাসহ ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিবকে আটক করেন ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুণ অর রশিদ কিছু মেশিনারিজ ক্রয়ের অর্ডার কপি মোবাইলে পাঠালে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশে ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিবকে ঐদিন দুপুরে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু ব্যাংক একাউন্টসহ উপযুক্ত অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে টাকা ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য বলে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে যশোর মেডিকেল কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেল কলেজের ১৩ কোটি টাকা অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য ২০লাখ টাকা নিয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ঢাকায় গিয়েছিলেন।

যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে মে মাসে সাজেদা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় হাসপাতালে আইসিইউ চালু হয়। তিন মাস পরে তারা চলে গেলে জেলা প্রশাসক স্থানীয় ব্যবস্থায় একই বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে এনেস্থেশিয়া বিভাগের প্রধান ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিবকে আইসিইউ এর দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই সময় থেকে তিনি অত্র বিভাগের টাকা ব্যাংকে না রেখে নিজের কাছে রাখতেন। কোনো হিসাব কখনও অফিসে দিতেন না। সেই সময় থেকে রোগীর ভর্তি ফি এক হাজার টাকা এবং দিন প্রতি বেড ভাড়া ৫শ’ টাকা নেয়া হত। ২০২৩ সালে অডিট আপত্তি করেন কর্মকর্তারা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তারপরও ব্যাংক একাউন্ট না কারে নিজের কাছে টাকা রাখতেন। পরে ঢাকা বিমানবন্দরে গত ১৯ নভেম্বর ২০লাখ টাকাসহ ধরা খাওয়ার পরে এখন সকল কাগজপত্র ম্যানেজ করে ব্যাংকে একাউন্ট করে জমা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, বিষয়টি এয়ারপোর্ট  থেকে তাকে জানানো হয়। তখন হাসপাতালের ২১ সালের জেলা স্বাস্থ্য কমিটির মিটিংয়ের কাগজ ও হাসপাতালের টাকা বলে ইমিগ্রেশন পুলিশকে তিনি জানান। অধ্যক্ষের কাছে কত টাকা রয়েছে সে সময় তিনি বলতে পারেননি পুলিশকে। এ সময় হাসপাতালের আইসিইউর আয়-ব্যায়ের হিসাব জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অধ্যক্ষ বলতে পারবেন।

যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাক্তার আবু হাসনাত মোহম্মাদ আহসান হাবিব বলেন, ‘আইসিইউর মেশিনারিজ কেনার জন্য টাকা সাথে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। কিন্তু ইমিগ্রেশন পুলিশ এক সাথে ২০ লাখ টাকা ব্যাগে দেখে। পরে টাকার বিপরীতে কাগজপত্র দেখতে চায়। কিন্তু তখন কাগজপত্র ও ব্যাংক একাউন্ট দেখাতে না পারায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘সোমবার ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। একাউন্ট খোলা হলে ডকুমেন্টা তৈরী করে ঢাকা ইমিগ্রেশনে জমা দিলে তারা টাকা দিয়ে দিবে।’

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত