খান জাহান আলী 24/7 নিউজ :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে পুনরায় হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, যারা অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।
তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, সে যেই হোক এবং যে দলই করুক না কেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় হিলটন হোটেলে আজারবাইজানে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যদি আমাদের দলের কেউ ও অপরাধে জড়িত হয়, সে তৎক্ষণাৎ শাস্তি ভোগ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অপরাধীরা অপরাধীই, আমরা অপরাধীদের অপরাধীর দৃষ্টিতেই দেখবো এবং আমরা সেটাই দেখার চেষ্টা করছি।’
‘অন্যকে শিক্ষা দেওয়াটা নিজের ঘর থেকেই শুরু করা উচিত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি সেটাই করছি (দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ) এবং আমি এটি অব্যাহত রাখবো।’
বিএনপি-জামায়াত সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির প্রসংগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের পাঁচ বছরের দু:শাসনে দেশে দুর্নীতির কোন সীমা ছিল না।’
শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের হীন স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আজারবাইজানের দূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে একজন প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী অন্যান্য বন্দীদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ইচ্ছা অনুযায়ী একজন গৃহপরিচারিকা কারাগারে তার সাথে রাখা হয়েছে। তার মানে বেগম জিয়াকে কারাগারে সে সেবা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারের ইতিহাসে বা কোন দেশে এমন নজির নেই কোন নিরপরাধী গৃহপরিচারিকা একজন বন্দীর সাথে কারাগারে অবস্থান করে। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই সুবিধা ভোগ করছেন।
বেগম জিয়াকে বিএসএমএমইউতে একটি কেবিনে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
বিএনপি বলছে বেগম জিয়া অসুস্থ, কারণ তারা তার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে এটা বলছে।
কিন্তু বিএনপি তার মুক্তির আন্দোলন বা জনমত গঠন করতে পারে নি।
কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন সে ক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিগত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলায় সাজা হয়। আরো মামলা চলমান রয়েছে।
বেগম জিয়ার দুই ছেলে মানি লন্ডারিং, ২১ আগস্ট গ্রেনড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, অভিযানগুলোতে আমরা ভালো ফল পাচ্ছি। কারণ মাদক একটি ব্যক্তি ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।
আমি ক্ষমতায় আসার পর সর্বাত্মকভাবে দেশের ও জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মায়ানমারের সাথে আলোচনা চলছে। এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাসানচরে আবাস গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু কিছু এনজিও তাদেরকে সেখানে যেতে দিতে চায় না।
তিনি বলেন, দেশে স্বাস্থ্য, আইসিটি, সামাজিক নিরাপত্তা সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ সাফল্যের কারণে বিশ্বে উন্নয়নের জন্য রোল মডেল হিসাবে পরিণত হয়েছে।
তিনি দেশের আর্থ-সামজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে আরো ১০টি বোয়িং এয়ারক্রাফট কিনে বিভিন্ন দেশের সাথে বিমান নেটওয়ার্ক বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২টি ও কানাডা থেকে ৩টি বোয়িং বিমান ক্রয় করা হবে।