আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৩:৩০

অর্ধশতাধিক ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিলেন স্কুল সভাপতি

পুঠিয়ায় সরিষাবাড়ী হাইস্কুলের অর্ধশতাধিক ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে ভুক্তভোগী ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে সভাপতির বিচার দাবি করেছেন। সভাপতির এমন কান্ডে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও।

শিক্ষার্থীরা জানান, রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলে যান পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক। স্কুলের দু’একজনের মাথার চুল বড় থাকায় তিনি স্কুলের পাশের সেলুন থেকে কাঁচি এনে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির প্রায় সকল ছাত্রের মাথার চুল এলোমেলোভাবে কেটে দিয়েছেন। এ ঘটনায় অনেক ছাত্র লজ্জায় স্কুলে আসছে না। আবার অনেকেই সেলুনে গিয়ে চুল ঠিক করেছে। সভাপতির এমন কর্মকান্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস করবে না বলে জানায়।

বিষয়টি নিয়ে স্কুলে অভিযোগ করতে আসা অভিভাবক সালাম হোসেন বলেন, ‘ছেলে কোনো অপরাধ করলে তিনি আমাদের জানাতে পারতেন। গত সপ্তাহে আমার ছেলের চুল কাটানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তারও চুল কেটে দিয়েছে। এখন লজ্জায় সে আর এই স্কুলে আসতে চাচ্ছে না। কান্নাকাটি করছে। এটা কী ধরণের কর্মকান্ড হতে পারে?’

তাহের আলী নামে আরেক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলেকে প্রতি মাসে নিজে সেলুনে নিয়ে গিয়ে চুল কাটিয়ে দেই। অথচ তার চুলও মাথার মাঝামাঝি জায়গা থেকে এমনভাবে কাটানো হয়েছে, যে এখন ন্যাড়া না করলে খুবই বাজে দেখাচ্ছে। কিন্তু ক্লাস সেভেনে পড়া ছেলে ন্যাড়া করতে চাইছে না। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের একাধিক শিক্ষক বলেন, স্কুলের দু’এক জন ছাত্রের চুল বড় থাকতে পারে। তাই বলে গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন ছাত্রের মাথার চুল কাটা উচিত হয়নি। চুলের বিষয়টি আগে ছাত্রের অভিভাবকদের অবহিত করা প্রয়োজন ছিল। অথবা যে ছাত্রের চুল বড় তাদের ক্লাসে ঢুকতে না করতে পারতো।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী সরদার বলেন, সভাপতি কী ভেবে এভাবে ছাত্রদের মাথার চুল কাটলো, সেটা আমার মাথায় আসছে না। তিনি তার মত অনুযায়ী চলছেন। আমাদের সঙ্গে সভাপতি এ ব্যাপারে কোনো আলাপ করেননি।

জানতে চাইলে স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক বলেন, আমি চাই স্কুলের একটা নিয়ম থাকুক। আমি সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মত দেখি। তাই তাদের চুল ছোট রাখতে এ কাজ করেছি। প্লিজ, এ বিষয়ে সংবাদ করবেন না। বিষয়টি আমরা বসে সমঝোতা করবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা মো. জাহিদুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মাথার চুল এভাবে কাটার অধিকার সভাপতি বা শিক্ষকদের নেই। বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত