ক্যাম্পাস প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিরত মুকিমুল হক চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার শিবির সন্দেহে ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের চার শিক্ষার্থীকে পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তিন দফায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তাদের পেটানো হয়। ওই ঘটনার শিকার মুকিমুল বিচার চেয়ে বুধবার বিকেল থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুকিমুল।
টানা ২৩ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচির পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে মুকিমুল বলেন, আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের ঘটনার বিচার চাই। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের অভিভাবক। কিন্তু আমাদের ওপর নির্যাতন করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেনি।
মুকিমুলের বন্ধু সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আকরাম হোসেন বলেন, মুকিমুলের কথা শুনে তার মা-বাবা দুইজনই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রায় ২২-২৩ ঘণ্টা অবস্থান নেওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখন আমরা তার সুস্থতার ওপর জোর দিচ্ছি। বাকি যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ। এ কারণে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন না।
এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নূর মুকিমুলের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ মামলা নেয় না। নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার চাই।
নির্যাতনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে কর্মসূচি পালন করেছেন সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আবাসিক শিক্ষককে ডেকে পুলিশে দেওয়া হয় চার শিক্ষার্থীকে।
অভিযোগ, মুকিমুলসহ চারজন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে প্রায় ১১ ঘণ্টা শাহবাগ থানার হাজতে রাখার পর পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।
মারধরের শিকার বাকি তিনজন হলেন-রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন এবং একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীন।