আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৩:৩৬

যুবলীগ সম্পাদক আলমগীর হত্যা! পেরিয়ে গেল ৫ বছর – পুলিশের উদাসিনতায় হতবাক পরিবার।

যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীরের পঞ্চম হত্যাবার্ষীকি ১৮ জুন। হত্যার ৫ বছর পেরিয়ে গেছে, মুছে গেছে রক্ত, মুছে গেছে দাগ, সন্তানদের কানে আর পৌঁছায় না বাবার চিরচেনা ডাক, স্মৃতি ধূসরবর্ণ ধারন করেছে, খুনিরা ফিরেছে আপন ঠিকানায়, কোট কাচারির দ্বারে দ্বারে সু-বিচারের বাণী কঁড়া নাড়ছে, ভাঙ্গছেনা ঘুম ক্ষমতার প্রভাবে। বিচার পতির বেতন আছে বিচার হয়নি আজও।

পরিবারের অভিযোগ হত্যাকারীরা এমপি নাবিল ও সদর উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মোহিত নাথের পৃষ্ঠপোষকতায় লালিত হবার কারনে আটক হচ্ছেনা।
২০১৪ সালের ২৫ মে বিকেলে যশোর শহরতলীর রাজারহাট চামড়া বাজার এলাকার সরদার ট্রেডার্স নামে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তরা আলমগীর হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা হামলা করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা আলমগীর হোসেন কে উদ্ধার করে, যশোর জেনারেল হাসপাতাল পরবর্তীতে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১৮ জুন মৃত্যুবরণ তিঁনি।

পরে ৩০ জুন নিহতের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে ২৯ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আজ বুধবার বিকেলে ৪ টায় মুড়লি বাজার মোড়ে জেলা তরুণলীগের পক্ষ থেকে তার ৫ম হত্যাবার্ষিকী পালনের সার্বিক প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে । নিহতের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন তেলাওয়াত, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা তরুণ লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহমুদ হাসান লাইফ।
২০১৪ সালের ২৫ মে রাতে রাজারহাট বাজারে আলমগীরের উপর রামনগর গ্রামের আব্দুল মান্নান সরর্দারের ছেলে এবং রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হাসান, শুকুর আলী মোল্যার ছেলে শাহিন ওরফে পাগলা শাহিন, মৃত মকিম খানের ছেলে মহব্বত আলী, মৃত আসমত আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে বিসমিল্লাহ, হাকিম বক্সের ছেলে অ্যাডভোকেট টিএম ওমর ফারুক, রামনগর পুকুরকুল এলাকার নুর ইসলামের ছেলে সুমন হোসেন ওরফে পাটালি সুমন, কানা মোতাহারের ছেলে মানিক, মোশারফ হোসেনের ছেলে রাকিব, রামনগর ধোপাপাড়ার জাফর খার ছেলে আকাশ, একই এলাকার খাঁ-পাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে নাজমুল ইসলাম, রামনগর সরদার পাড়ার আনারের ছেলে মুরাদ, সাকার ছেলে আহাদ, রফিকুলের ছেলে আফজাল, মৃত জোহর আলীর ছেলে ওমর আলী, কাজীপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে ফসিয়ার রহমান গাজী, মৃত মোহাম্মাদ আলী গাছির তিন ছেলে শফিক ওরফে শফিকুল, তরিকুল ইসলাম ও তফিকুল ইসলাম, শাহদৎ হোসেনের ছেলে সিদ্দিক, মহব্বত আলীর দুই ছেলে মুরাদ হোসেন ও ফরহাদ হোসেন, আবু বক্কারের ছেলে মহিদুল ইসলাম, আব্দুল জলিল ও তার দুই ছেলে আলম এবং আলিম, মৃত আরশাদ আলীর ছেলে আব্দুল জব্বার খান, শুকুর মোল্যার দুই ছেলে মফিজ ও জিয়াউর রহমান, মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে সুজন হাসান, শেখ আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে শেখ রাসেল ইসলাম, আদাড়ে সরর্দারের দুই ছেলে ইয়াছিন আরাফাত ও শরফত হোসেন, মৃত আব্বাস আলীর ছেলে আব্দুল গফুর, আতিয়ার সরর্দারের ছেলে আকরামুল ইসলাম, মৃত আনু সরর্দারের ছেলে শওকত হোসেন, আকমল সরর্দারের ছেলে শরিফুল ইসলাম মিন্টু, শওকত হোসেন বেচার ছেলে মিলন হোসেন, মুড়োলি খাপাড়ার আনছার আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন এবং ফারুক খানের ছেলে মোশারেফ হোসেন হামলা করে। তারা আলমগীরকে গুলি করে ও বোমা মেরে মারাত্মক আহত করে। এসময় প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে আলমগীর হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি পাগলা শাহিনের লাশ গত বছর মাগুরা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্ত ফসিয়ার রহমান মুড়লীর পাশেই কাজীপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। মহব্বত কখনো বাড়ি, আবার কখনো আশপাশের আত্মীয় বাড়িতে থাকেন। অপর অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিসমিল্লাহ ও মহিদুল ইসলাম কেশবপুরে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।
এসব খুনিরা সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহম্মেদ এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। ফলে থেমে আছে মামলার বিচার কার্যক্রম। একের পর এক দিন ধার্য হলেও মামলার চার্জ গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না।
নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রী রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজনীন নাহার আলমগীর জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি যুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারার কারণে আটকে আছে মামলার চার্জ গঠন। হত্যাকাণ্ডের পরের বছরই তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। কিন্তু মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আর আইনি প্রক্রিয়া এগোয়নি। খুনিরা এলাকায় ঘোরাফেরা করলেও গ্রেপ্তার হচ্ছে না। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।

খানজাহান আলী 24/7 নিউজ / অনুসন্ধানী দল।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত