আজ - বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:৪১

ওয়েবসাইট থেকে বেমালুম হাওয়া অসম NRC-র যাবতীয় তথ্য!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :২০১৯ সালের অগাস্ট মাসেই প্রকাশিত হয় অসমের চূড়ান্ত নাগরিক (NRC) তালিকা। নাগরিকদের যাবতীয় তথ্যপুঞ্জীটি (National Register of Citizens) রাজ্যের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধকের (এনআরসি) ওয়েবসাইট থেকে বেমালুম হাওয়া! সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল এই সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য (NRC data) জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। তাই ওয়েবসাইটে ওই বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে যে, এনআরসির তথ্য নিরাপদেই আছে! “ক্লাউড ভিজিবিলিটি’র ক্ষেত্রে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা” দেখা দিয়েছে বলেই এই বিপত্তি। মন্ত্রক আরও জানিয়েছে যে সমস্যাটি ‘শীঘ্রই সমাধান করা হচ্ছে’। এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, তথ্য উড়ে যাওয়ার কারণ হল আইটি ফার্ম Wipro-র সঙ্গে চুক্তি পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। অসম এনআরসি-তে ভারতীয় নাগরিকদের নির্বাসন এবং অন্তর্ভুক্তির চূড়ান্ত তালিকাটি গত ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে তা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.nrcassam.nic.in-এ আপলোড করা হয়েছিল।

“বিপুল পরিমাণ এই তথ্যের জন্য ক্লাউড পরিষেবা সরবরাহ করেছিল উইপ্রো এবং তাদের চুক্তি ছিল গত বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে এই চুক্তি পূর্বের সহ-সমন্বয়কারী (Prateek Hajela) পুনর্নবীকরণ করেননি। সুতরাং, ১৫ ডিসেম্বর থেকে সব তথ্য অফলাইন হয়ে গেছে উইপ্রোর নিয়মে। আমি ২৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব (NRC co-ordinator) গ্রহণ করেছি,” এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক হিতেশ দেবশর্মা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন।

তিনি জানান যে ৩০ জানুয়ারি রাজ্য সমন্বয় কমিটি একটি বৈঠকে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই উইপ্রোকে চিঠি দেয়। “একবার উইপ্রো ডেটা লাইভ করে দিলেই তা জনসাধারণের জন্য ফের উপলব্ধ হবে। আমরা আশা করি যে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে মানুষজন ফের তথ্য দেখতে সক্ষম হবে,” বলেন হিতেশ দেবশর্মা।

প্রতীক হাজেলা অসমের এনআরসির কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। তিনি গত অক্টোবরে বদলি হয়ে যান। তবে হিতেশ দেবশর্মার নিয়োগে বিলম্ব হওয়ায় উইপ্রো ক্লাউড পরিষেবা সাবস্ক্রিপশন নতুন করে চালু করতেও দেরী হয়ে যায় বলে বিভিন্ন সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে। ক্লাউড পরিষেবা পুনর্নবীকরণের জন্য দ্রুত চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই সূত্রের খবর। যদিও অসমের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ঘটনাটিকে রহস্যময় এবং ‘গাফিলতি’ হিসেবেই অভিহিত করেছে।

অসমে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করার জন্য তৈরি নাগরিক তালিকা থেকে ১৯ লাখেরও বেশি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে যাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। কেন্দ্র জানিয়েছে যে সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাদের নাম এনআরসিতে নেই তাদের বিদেশি হিসাবে ঘোষণা করা যাবে না।

অসম বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা দেবব্রত সাইকিয়া ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জরুরিভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন। “অনলাইনে কেন হঠাৎ করে সব তথ্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তা রহস্যের বিষয়, বিশেষ করে এখনও এনআরসি কর্তৃপক্ষের ধীরগতির কারণে আপিলের প্রক্রিয়াও শুরুই হয়নি। সুতরাং, অনলাইন তথ্য নিখোঁজ হওয়া একটি গাফিলতির কাজ বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে,” চিঠিতে বলেছেন ওই কংগ্রেস নেতা।

বাংলাদেশ থেকে আগত অবৈধ অভিবাসীদের সনাক্তকরণ ও নির্বাসনের জন্য ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ সাল, দীর্ঘ ছয় বছর অসমে আন্দোলন চলেছে। অসমের জনগণের জন্য এনআরসি অপরিসীম তাত্পর্যপূর্ণ। এনডিটিভি

আরো সংবাদ