আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - বিকাল ৪:২৫

খাবারের কষ্ট বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালেন ওসি

খানজাহান আলী নিউজ 24/7: মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন গভীর চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে অসহায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কপালে। বিশেষ করে দিন আনে দিন খায় মানুষের ভিতরে এই চিন্তার ভাজ চরম আকার ধারণ করেছে।

তেমনই একজন বরিশালের গৌরনদীর বিধবা মরিয়ম বেগম। ৭০ বছরের এই বৃদ্ধা বয়সের ভারে ইট ভাঙ্গার কাজটিও তেমনভাবে করতে না পারলেও, এ কাজ করে যে টাকা রোজগার করছেন তা দিয়ে কোনোভাবে তার অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটছে।

কঠোর লকডাউনেও পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হচ্ছেন এবং ইটভাঙ্গার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাউরগাতি গ্রামের মৃত হালান সরকারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৭০) ছিলেন সচ্ছল পরিবারের একজন গৃহিণী। চার কন্যা ও স্বামীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তার দিনকাল।

মরিয়ম বেগম বলেন, স্বামী থাকা অবস্থায় চার কন্যার বিয়ে দেন। পরবর্তীতে স্বামীর রোজগার দিয়ে দুজনের খেয়ে পরে ভালই ছিলেন। কিন্তু বিধিবাম স্বামীর মৃত্যুতে মুহূর্তেই তার সুখের সংসার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ৫ বছর আগে স্বামী হালান সরকার মারা যান। মেয়েদের তেমন সচ্ছল পরিবারে বিয়ে হয়নি। তারা নিজেদের সংসার নিয়েই টানাটানিতে আছে। তাকে দেখার সুযোগ নেই। স্বামীর মৃত্যুর পরে জীবন বাঁচানোর জন্য নিজেকেই জীবন সংগ্রামে নামতে হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রোববার সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে লকডাউনের দায়িত্ব পালন করতে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন। বার্থী এলাকায় পৌঁছলে মহাসড়কের পাশে বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে তিনি গাড়ি থেকে নেমে এসে বৃদ্ধার কাছে বিস্তারিত জানতে চান।

এ সময় অসহায় মরিয়ম বেগমের কাছে তার অসহায়ত্বের কথা শুনে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং মরিয়ম বেগমের হাতে তুলে দেন ৭ দিনের বাজার খরচ বাবদ আর্থিক সহায়তা।

ওসির দেয়া আর্থিক সহায়তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মরিয়ম বেগম বলেন, স্যারে মোরো বাজার করতে টাহা দিছে। কয়দিন কাম না কইররা খাইতে পারমু।

গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, লকডাউন কার্যকরে তার থানা এলাকায় নিয়মিত কাজের তদারকিতে বের হন তিনি। এসময় বার্থী গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে মরিয়ম নামে ওই বৃদ্ধাকে ইট ভাঙ্গতে দেখেন। কারো মা, কারো দাদির বয়সী ওই অসহায় মরিয়ম বেগমের দুরবস্থা দেখে সত্যি কষ্ট পেয়েছি। তাই তার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব তাই বেতনের টাকা থেকে করেছি।

আরো সংবাদ