আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - দুপুর ১:৩১

খুলনার কয়রায় অমাবস্যার জোয়ারে পানি ঢুকে নতুন করে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী

অমাবস্যার জোয়ারে বিধ্বস্ত খুলনার কয়রা অঞ্চল । জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। রিং বাঁধের কয়েকটি জায়গা দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে নতুন করে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে হরিণখোলা-ঘাটাখালি রিং বাঁধটি মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। তবে ২ নম্বর কয়রা এলাকার রিং বাঁধের দুটি জায়গা দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। আজ রোববারও স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধে মেরামতের সময় জোয়ার চলে আসে। তাই বাঁধের ওই সব ভাঙা অংশ মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এদিকে উত্তর বেদকাশি এলাকায় আম্পানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ এখনো সংস্কার করা হয়নি। জোয়ারের চাপে সেই সব ভাঙা অংশ প্রতিদিন বড় হচ্ছে। এতে সংস্কারকাজ আরও দুরূহ হয়ে পড়ছে।

কয়রার হরিণখোলা এলাকার বাসিন্দা রাব্বানি সরদার বলেন, বাঁধের সঙ্গে এলাকার মানুষের ধৈর্যেরও বাঁধ ভেঙে গেছে। সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে আর কতবার বাঁধ বাঁধবে। এই সব ভাঙনে আম্পানের পর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতিতে চোখের সামনেই আবারও ভেঙে গেছে বাঁধ। মানুষ আর ফ্রিতে শ্রম দিতে চাচ্ছে না। বস্তা-বাঁশের সংকটও দূর করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও ফণীর পর আম্পানের আঘাতে কয়রায় বাড়িঘর, বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে নোনা পানির কারণে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অস্তিত্ব রক্ষায় কয়রাবাসী নিজেরাই দল বেঁধে বাঁধ মেরামত করেছিল। তবে গাফিলতির কারণে আবারও তা ভেঙেছে। কয়রার অধিকাংশ মানুষ গরিব, অসহায়, খেটে খাওয়া দিনমজুর। যারা এক দিন কাজে না গেলে পরিবারে চুলা জ্বলে না। সেই মানুষগুলো পরিবারকে অভুক্ত রেখে এত দিন শ্রম দিয়েছেন। কয়রাকে রক্ষায় ১৪/১ পোল্ডারের প্রায় ৯৫৮ কোটি টাকার প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

 

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, আম্পানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বেশ কিছু এলাকা অস্থায়ী রিং বাঁধ দিয়ে পানিমুক্ত করা হয়েছিল। কিছু এলাকা এখনো পানিমুক্ত করা যায়নি। এরপর চলতি অমাবস্যার জোয়ারে কয়রা সদর, উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের রিং বাঁধের আটটি পয়েন্ট আবার ভেঙে যায়। সেগুলোর কয়েকটি মেরামত করা হলেও কয়েকটি সম্ভব হয়নি। এভাবে ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে চলছে। স্থায়ী বাঁধ না হলে এই সমস্যা থেকে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সবকিছু জানানো হয়েছে। তারা বলছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করবে।

আরো সংবাদ