হাজার হাজার আষেকান, ভক্ত ও মুরীদদের উপস্থিতিতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঐতিহাসিক গাজী, কালু ও চম্পাবতীর মাজারে ওরস সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এক দিনব্যাপী এ ওরস অনুষ্টিত হয়। কিন্তু ৪/৫ দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ মাজার এলাকায় এসে জড়ো হতে থাকেন।
প্রায় ৪০ বিঘা জমি জুড়ে মানুষের উপচে পড়া ভীড়, ভক্তদের জিকির, নাচ, গান চলে সারারাত। ওরসের দিন সকাল থেকে শুরু করে সারা রাত চলে ওরস। রাত যত বাড়তে থাকে দূর দূরান্ত থেকে নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর, বদ্ধদের আগমনে ততই ভীড় বাড়তে থাকে। এসময় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়ে কোথাও পা রাখার স্থান পাওয়া যায় না ।
কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার বাদুরগাছা গ্রামে ঐতিহাসিক গাজী কালু চম্পাবতীর মাজার অবস্থিত। বারোবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে এক কিলোমিটর দূরে মাজার আস্তানায় পৌঁছাতে দর্শনার্থীদের ভীড়ের কারণে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। সকলেই মাজার এলাকায় এসে ধর্মমত নির্বিশেষে শ্রদ্ধাঞ্জাপন করেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় মাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৩৩ শতক জমির ওপর অবস্থিত মাজার উপচে ৩৯ বিঘা জমিজুড়ে বসেছে বিভিন্ন দোকান। মাইজ ভান্ডারী, গাজীর গান, কাউয়ালী, দেহতত্ব, হিজড়াদের নাচ-গান ও আশেকানদের জিকিরে এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। কোনো কোনো স্থানে আগরবাতী, মোমবাতী জ্বালিয়ে ভক্তদের জিকির ও প্রার্থণায় মগ্ন থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, ওরসের কয়েক দিন আগে থেকেই পবিত্রতা রক্ষা ও শৃংখলা বজায় রাখতে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় এক হাজার যুবককে নিয়ে সেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি করা হয়। প্রতি বছরই এলাকার ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দ্বায়িত্ব পালন করেন। পীর আওলীয়াদের এ মাজার আগত ভক্তদের কাছে পূর্ণভূমিতে পরিণত হয়েছে।