আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১১:০৪

ডেঙ্গু আক্রান্তে ১জনের মৃত্যু।

যশোরে দিনে দিনে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আক্রান্তের সাথে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে ১৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন ১ জন। মৃতের নাম রুমা খাতুন (৪০)। তিনি অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের তরিকুল ইসলামের স্ত্রী। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ২৬১ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলো। মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কমিটি গঠন ছাড়াও স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার জন্য কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে, নতুন আক্রান্ত ১৭ জনের সবাই স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জন, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৯ সালে যশোরে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এক প্রকার ভয়াবহ রুপ ধারণ করে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪৫১ জন। নারী পুরুষের সাথে আক্রান্তের তালিকায় শিশু ছিলো। এছাড়া ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিলো। কিন্তু ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ এক লাফে কমে যায়। যশোর জেলায় মাত্র ৫৬ জন নারী পুরুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃতের তালিকায় কেউ ছিলোনা। ২০২১ সালের ৪২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর ২০২২ সালে ৪৪৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। আর ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬১ জন। মারা গেছেন ৩ জন। তারা হলেন চৌগাছা উপজেলার উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ দোলন (৩৩), বাঘারপাড়া উপেজলার মীর্জাপুর  গ্রামের আব্দুল গফফার (৬৫) ও অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের রুমা খাতুন (৪০)।
গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হওয়া কারণে এবারও যশোর জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে , এডিস মশার ডিম এক বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। পানি পেলেই ডিম থেকে মশা তৈরি হয়। গত বছরে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে এডিস মশার অনেক ডিম থেকে গিয়েছিলো। চলতি বছরেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে যশোর সদর ও অভয়নগর উপজেলা। এখানে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানিয়েছেন, যশোরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রস্তুতি কাজে লাগানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন উপজেলায় নিয়মিত উঠান বৈঠক ও অবহিতকরণ সভা করা হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু সচেতনতার বিষয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মী ও কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের জণগনের সচেতন করার কাজে মাঠে নামানো হয়েছে। সিভিল সার্জন আরো জানান, বাড়ির আশপাশ ও ডোবা নালা নিয়মিত পরিষ্কার, ফুলের টব, টায়ার ও ডাবে পানি জমে না থাকে সেজন্য মানুষকে সচেতন করে দেয়া হচ্ছে। যশোর শহর পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে যশোর পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এসিড মশা নিধনে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা জারির পরিকল্পনা রয়েছে। কেননা পরিস্কার পরিছন্ন পরিবেশের মাধ্যমেই এডিস মশার উৎপীড়ন ঠেকানো সম্ভব।

আরো সংবাদ