তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করেছেন। তাঁদের অর্থমন্ত্রীও কালো টাকা সাদা করেছিলেন। তারেক রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। যে কারণে তাঁর ১০ বছর সাজা হয়েছে। আরাফাত রহমানের দুর্নীতি সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। সেটির সঙ্গে বালিশ আর পর্দা দুর্নীতির কোনো তুলনা হয় না।
হাছান মাহমুদ বলেছেন, কিছু সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামে রবি-দৃষ্টি বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন। নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বালিশ কিংবা পর্দা দুর্নীতি ঘটেছে কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে। সেখানে কোনো রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধির সংশ্লেষ নেই। এই দুটি দুর্নীতির ব্যাপারেই সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির ব্যাপারে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করছেন। বালিশ দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্দা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। অবশ্য তাঁরাও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, যারা দুর্নীতিতে দেশকে পরপর চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশকে লজ্জিত করেছিল দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার সেই বিএনপির নেই। বর্তমান সরকার দুর্নীতি কঠোর হস্তে দমন করতে কাজ করছে।
দৃষ্টির সভাপতি মাসুদ বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির সদস্যা সাফিয়া গাজী রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামসুদ্দিন তাবরীজ প্রমুখ।
সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না—বিএনপির এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সৌদি আরবে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আছে, যারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। সেখানে তারা সব অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তাদের জন্য সেখানে বাঙালিদের বদনাম হচ্ছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন হাজার হাজার রোহিঙ্গা সৌদি আরব যায়। বিএনপিই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়।
সরকার কূটনৈতিকভাবেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করছে বলে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সমস্যার সমাধান হবে। নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যেতে চাইছে। তাদের পাসপোর্ট তৈরিসহ নানাভাবে যারা সহযোগিতা করছে তাদেরও কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
এর আগে রবি-দৃষ্টি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে বিতর্ক। বিতর্ক ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যুক্তি-তর্কের মাধ্যমেই সমাজ এগিয়ে যেতে পারে। এ জন্য বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিতর্ক ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজ টিকতে পারে না।
প্রতিযোগীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জন্য দুটি স্বপ্নের কথা বলেছেন। একটি হচ্ছে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করা। আরেকটি হচ্ছে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি পরিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা। আজ বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে। ২০৪১ সাল নাগাদ আমরা যে উন্নত দেশ রচনার স্বপ্নের কথা বলেছি, সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে তরুণদের এগিয়ে যেতে হবে।