আজ - শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:৩৪

বারান্দীপাড়ায় সন্ত্রাসীদের চরম দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত জনপদ – পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের বারান্দীপাড়া-মোল্লাপাড়ায় বোমাবাজ-সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্যের কারণে সেখানকার মানুষ এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। প্রায় প্রতিদিন রাতে ওই এলাকায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে।

গত শনিবার রাতেও এলাকার কাজী অফিসে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় একজন আহত হয়েছেন। এর আগের রাতে বোমায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু’জন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বোমা হামলা পাল্টা হামলা ছাড়াও সশস্ত্র মহড়া দিয়ে চলেছে সন্ত্রাসীরা।

তুচ্ছ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে ইতোমধ্যে ২-৩ জন আহত হয়েছেন। তবে বারান্দীপাড়া-মোল্লাপাড়ায় বোমাবাজ সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারান্দীপাড়া-মোল্লাপাড়া এলাকায় এমনিতেই মাদক ব্যবসা, চোরের উপদ্রব আর ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য রয়েছে।

তার ওপর ক্ষমতাসীন দলের দুটি গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মহড়া দেওয়ায় কারণে সবসময় এলাকার মানুষ আতঙ্কে থাকেন। মূলত এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ায় ওইসব দুর্বৃত্ত শান্তিপ্রিয় মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে।
সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাত করছে। তাছাড়া নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে তারা এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে থাকে।

এ কারণে সন্ধ্যা নামলেই এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন হলো আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকার দুটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একে অন্যকে ঘায়েল করতে তারা এলাকায় মহড়াও দিচ্ছে। তাছাড়া দুটি গ্রুপের সন্ত্রাসীরা এলাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য দুটি গ্রুপের সন্ত্রাসীরা গোপনে প্রচুর বোমা বানাচ্ছে। সূত্র জানায়, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ গত শনিবার রাতে বারান্দীপাড়ার কাজী অফিসে বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুস সালাম নামে একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার আহত হয়েছেন। তবে আহত আব্দুস সালাম বোমা হামলায় জড়িত কাউকে চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

এর আগেরদিন শুক্রবার রাতে বারান্দী মোল্লাপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণে আওয়ামী লীগের দু’কর্মী গুরুতর আহত হন। এরা হচ্ছেন এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম জিতু, মঞ্জু আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় আহত শরিফুল ইসলাম জিতুর ভাই সাইফুল ইসলাম শক্তি মোল্লাপাড়ার আরিফ ও শাকিলকে দায়ী করেছেন। তার অভিযোগ ছিলো, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই প্রতিপক্ষ গ্রুপ বোমা হামলা চালানোর কারণে জিতু ও শহিদুল আহত হয়। তবে কারো কারো ভাষ্য, বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে তারা আহত হতে পারে। অপরদিকে গত দু’দিন ধরে বোমাবাজির ঘটনায় এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

এ কারণে সন্ধ্যা নামলেই অনেকেই শহর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। সূত্র জানায়, বোমাবাজ সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বর্তমানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন।

তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরপর দু’দিন ধরে এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ৩ জন আহত হলেও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আটকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

তাছাড়া এলাকায় পুলিশের জোরালো টহলও নেই। এদিকে বারান্দীপাড়া-মোল্লাপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাত করছে সন্ত্রাসীরা। সম্প্রতি ওই এলাকায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ২-৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের নাম জাকির হোসেন। গত ২৮ মে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে তিনি আহত হন।

আরো সংবাদ