পরিকল্পনাটি কার্যকর হলে সংবাদমাধ্যমটি তাদের শীর্ষ প্রতিনিধিদের অনলাইন প্লাটফর্মে ব্রেকিং নিউজ কিংবা তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ দেয়া বন্ধ করতে বলবে বলে এক প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মীদের করা মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার জেরে ব্রিটিশ এ সংবাদমাধ্যমটি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে বলেও জানিয়েছে তারা।
বিবিসির রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক লরা কুসেনবার্গ ও উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সম্পাদক জন সোপেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার শিকার হন।
টোরি এক মন্ত্রীকে এক লেবার কর্মীর ঘুষি মারার মিথ্যা অভিযোগের বিষয়টি বারবার উত্থাপন করে জেরেমি করবিনের সমর্থকদের রোষের শিকার হয়েছেন কুসেনবার্গ।
সোপেলের করা বেশ কয়েকটি টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমালোচনাধর্মী অবস্থানের আভাস পাওয়া গেছে বলেও অভিযোগ অনেকের।
এসব কারণেই বিবিসির নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক পরিচালক ফ্রান আনসোর্থ সাংবাদিকদের রাজনীতি ও চলতি বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘন ঘন পোস্ট দেওয়া বন্ধ করার বিষয়টি ভাবছেন বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
বিবিসির এক সাংবাদিক বলেন, “তিনি (আনসোর্থ) বলেছেন, খানিকটা প্রতিরোধের মুখে পড়তে পারেন এমন সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তিনি একটি বিতর্ক শুরু করতে চান এবং প্রতিনিধিদের টুইটার থেকে সরে আসতে বলার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন।”
পুরনো ব্রডকাস্টিং হাউসে বিবিসির কাউন্সিল চেম্বারে এক অনুষ্ঠানে আনসোর্থ তার এ পরিকল্পনার রূপরেখা দেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিবিসির এ নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক পরিচালকের ঘনিষ্ঠ অনেকেই বলছেন, সবার টুইটার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আনসোর্থ হয়তো ‘রসিকতা’ করে বলেছেন; তবে বিবিসির সোশাল মিডিয়া বিষয়ক নির্দেশনা অনুসরণের ব্যাপারে তার অবস্থান বেশ কঠোর।
গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথোপকথনে আনসোর্থও সাংবাদিকতা সংক্রান্ত বিষয়ে টুইটারের কার্যকারিতা স্বীকার করে নিয়েছেন।
“আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়ক নীতির দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার আমাদের। একে একধাপ পিছিয়ে যাওয়া বলা ঠিক হবে না বলে মনে করি আমি,” বলেছেন তিনি।
কয়েকদিন আগে সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ফোরও তাদের ‘নন পলিটিকাল স্টাফদের’ চলতি বিষয়ে টুইট করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
বিবিসির সম্পাদকীয় নীতির সাবেক নিয়ন্ত্রক ফিল হার্ডিং সংবাদ প্রচারে টুইটারের ভূমিকা পর্যালোচনার সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
“তাদের (সাংবাদিক) উচিত দুই পা পেছানো এবং যা বলছে তা নিরপেক্ষ ও সত্য কিনা নিশ্চিত হওয়া। কেননা, এই মুহুর্তে নিরপেক্ষ সেবাই আমাদের জন্য বেশি জরুরি,” অবজারভারকে এমনটাই বলেছেন ফিল।