নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়িতে ডেকে এনে বিশেষ কৌশলে বেকায়দায় ফেলে অর্থ আদায় করতো এমন প্রতারক চক্রের চার যুবতী এবং তাদের চার সহযোগী যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই চক্র বেশ কিছুদিন ধরে নওগাঁ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে এই অপকর্ম করে আসছিল। পুলিশ তাদের অনেক দিন ধরে খুঁজছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার গভীররাতে ল্যাবজোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী পরিচালক ময়নুল হোসেনের অভিযোগের ভিত্তিতে নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ (দক্ষিণপাড়া) এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- শহরের পার-নওগাঁ দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত শহিদুল ইসলামের তিন মেয়ে নিপা খাতুন, শান্তা খাতুন, সন্ধ্যা খাতুন, বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানার কোলা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে রিয়া খাতুন, সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ মন্ডলের ছেলে হারুন মন্ডল, আজাহার আলীর ছেলে আরিফ হোসেন, আফজাল হোসেন মোল্লার ছেলে নুর ইসলাম নোবেল এবং আব্দুস সালামের ছেলে আশিক।
গত শুক্রবার সকালে তাদের নওগাঁ জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, ময়নুল হোসেনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের কৌশল অবলম্বন করে তারা। কিন্তু কৌশলে তিনি বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওসি আব্দুল হাইয়ের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল হাই জানান, গ্রেফতার হওয়া নিপা, শান্তা ও সন্ধ্যা উল্লেখিত রিয়া নামের মেয়ের সহযোগিতায় যে কোন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে টার্গেট করে মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর প্রথমে প্রেমের অফার দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে বাড়িতে ডেকে আনা হয়। এই ডাকে কেউ কেউ সাড়া দিয়ে ফেঁসে যায়। যারা তাদের আহ্বানে সাড়া দেয় তাদের বাড়িতে ডেকে এনে ঘরের দরজা বন্ধ করে উভয়ে বিবস্ত্র হয়। এরপর কৌশলে তাদের ছেলে সহযোগীদের ফোন করা হয়। তারা এসে তাদের বিবস্ত্র অবস্থায় বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলে। এরপর ছবি ফেসবুকে বা নানাভাবে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করা হয়। ইতিপূর্বে নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকার শিউলী ম্যানসনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকাকালীন সময় মঙ্গলপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামকে এমন ফাঁদে ফেলে নগদ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে এবং ৮ লাখ টাকা দাবি করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। সে ব্যাপারেও একটি মামলা থানায় লিপিবদ্ধ রয়েছে।