খানজাহান আলী নিউজ ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের কাউনিয়ার গ্রামের বাড়ি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার থেকে একজন এসআইসহ চার পুলিশ সদস্য বিচারকের গ্রামের বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার পর বিচারকের মা মোছা. মরিয়ম খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সন্তান ন্যায়বিচার করেছে, এজন্য আমি গর্বিত। আমি আমার সন্তানকে আল্লার হাতে সঁপে দিয়েছি। তিনি তাকে দেখভাল করবেন। আমি তার জন্য দোয়া করি সেজন্য আরও বড় কিছু হতে পারে।’ বিচারকের ছোট ভাই প্রভাষক খায়রুল ইসলাম হেলাল বলেন, বড় ভাই খুবই সচ্চরিত্রের অধিকারী একজন ভাল মানুষ। তিনি সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত। ছাত্রজীবনেও কোনোদিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি আরো জানান, আট ভাইবোনের মধ্যে বড় ভাই ডা. এম এ হাসান (চক্ষুবিষেশজ্ঞ) ঢাকার সাভারে পরিবার নিয়ে নিজ বাসায় থাকেন। দ্বিতীয় ভাই আনোয়ার হোসেন বাড়িতে থেকে কৃষিকাজ করেন। তৃতীয় ও চতুর্থ দুই বোন হামিদা বেগম ও রহিমা বেগমের বিয়ে হয়েছে এলাকাতেই। পঞ্চম ভাই বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান(জেলা ও দায়রা জজ) ঢাকা। ষষ্ঠ ভাই জাহাঙ্গির আলম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে লাইব্রেরিয়ান পদে কর্মরত। আমি প্রভাষক খায়রুল ইসলাম হেলাল গাজীরহাট কারিগরি কলেজে কর্মরত, ৮ম ভাই বেলায়েত হোসেন প্রতিবন্ধী। বাবা রইচ উদ্দিন স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি করতেন। অনেক আগেই তিনি আমাদের ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন। মা ও প্রতিবন্ধী ছোট ভাইকে নিয়ে আমি কাউনিয়াতে গ্রামের বাড়িতে থাকি। তিনি আরও জানান, বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক সম্মান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ১৩তম বিসিএসের মাধ্যমে সহকারী জজ হিসেবে টাঙ্গাইল জেলা জজ আদালতে যোগদান করেন। তিনি এমনই সৎভাবে জীবনযাপন করেন যে, তার নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। তিনি সরকারি বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। এদিকে খালেদা জিয়ার বিচারের রায়কে ঘিরে গত বুধবার থেকে তার গ্রামের বাড়িতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারকের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, খালেদা জিয়ার রায় আমার গ্রামের বিচারক দিয়েছে। এতে আমরা গর্ববোধ করছি। তবে বিচারকের পরিবার কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করায় আমি ব্যক্তিগতভাবে তার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে আশ্বস্ত করে বলেছি, ভয়ের কোনো কারণ নেই। কাউনিয়া থানার ওসি মামুন উর রশিদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী সতর্ক রয়েছে। কেউ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসআই শাহাদৎ হোসেন জানান, বিচারকের বাড়িতে যেন কোনোপ্রকার নাশকতা না ঘটে সেজন্য আমরা তৎপর রয়েছি।