আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১২:৪০

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬২৪৫ কোটি

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি : দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি পণ্য থেকে ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

রোববার ( ২৫ জুলাই ) রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পরিসংখ্যন শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তানভির মেহেদী ।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের গ্রোথ অনান্য সময়ের চাইতে বেশি হলেও ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ তে ঘাটতি ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।২০১৬-১৭ তে বেশি আদায় হয়েছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি ২০৩ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ঘাটতি ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০১৩-১৪ তে ঘাটতি ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ তে ঘাটতি ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতি পরিমান ছিল ১৯৪ কোটি টাকা।

এদিকে চলতি বছরে এত বড় অংকের লক্ষ্যমাত্রা আদায় নিয়ে সংশয় রয়েছে সব মহলে। তারা বলছেন রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাস্টমস ও বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। তা না হলে কখনো এত বড় অংকের রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে না।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, চলতি অর্থবছরে এত বড় অংকের রাজস্ব আদায় আমাদের সবার জন্য কঠিন হয়ে দাড়াবে। কারন করোনা পরিস্থিতি বর্তমান সময়ে ও অন্যদিকে সুষ্ঠভাবে বাণিজ্য সম্পাদনে অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনা  নিয়ে অনেকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করেছেন।  তবে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হলে এবন্দর থেকে লক্ষ্য মাত্রার দ্বিগুণ রাজস্ব আয় কাস্টমসের পক্ষ্যে সম্ভব।  

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম  জানান, আমদানি বাণিজ্যের ক্ষত্রে বন্দরে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে কয়েক বছর ধরে  রাজস্বের লক্ষমাত্রা পূরন অনিশ্চিত হয়ে দাড়াচ্ছে।  আমদানির চাহিদা বাড়লেও ৫ বছর আগে প্রতিদিন যে পরিমান পণ্য আমদানি হতো এখনও তার পরিমান সে জায়গাতে রয়েছে। আমদানি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে বন্দরে রাস্তার সংকীর্ণতা রয়েছে।  ফলে ব্যবসায়ীরা চাহিদা মত পণ্য আমদানি করতে পাছেন না।  বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে  বলা হলেও নজরদারী কম। যদি চাহিদা মত  সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় তবে আমদানি বাড়বে রাজস্ব ও বাড়বে।

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান,বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ইতিমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পণ্যগারের জন্য জমি অধিগ্রহন,নতুন পণ্যগার নির্মান ও বন্দর এলাকায়  রাস্তাঘাটের অনেকটা উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরে আরো জমি অধিগ্রহন ও পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। যে সব পণ্যে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে সেসব পণ্য আলাদা নিরাপদ জাইগায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদার কথা ভেবে আরো কিছু উন্নয়নমূলক কাজের চিন্তা ভাবনা চলছে। এসব উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে এ বন্দরে বাণিজ্য আরো গতি বাড়বে বলেও জানান তিনি।

আরো সংবাদ