বেনাপোল স্থলবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পচনশীল পণ্যের শুল্কায়ন কার্যক্রম সন্ধ্যা ৬টার পর বন্ধ করে দিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। দিনের মধ্যে তারা পণ্য খালাস নিতে না পারায় প্রচণ্ড গরমে অধিকাংশ পণ্য পচে নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতির মূখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ।
এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, সন্ধ্যার পর পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, মাঝে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফল জাতীয় খাদ্যদ্রব্য আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল জাতীয় পণ্যের আমদানি বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের ফল ও খাদ্য দ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। প্রতিদিন এ আমদানি পণ্য থেকে সরকারের ২ থেকে ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আসে। তবে সম্প্রতি এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের শুল্ক ফাঁকির কারসাজিতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি তাদের কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীরা পড়ছেন বিপাকে।
আমদানিকারকের প্রতিনিধি রয়েল হোসেন জানান, আগে তারা গভীর রাত পর্যন্ত পণ্য খালাস নিতে পারতেন। তবে বর্তমানে সন্ধ্যার পর পচনশীল জাতীয় কোনো কাঁচামাল খালাস নিতে পারছেন না। এতে তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পণ্য আটকে থেকে গরমের মধ্যে পচে নষ্ট হচ্ছে। সৎ ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাস্তবায়ন করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান এই ব্যবসায়ী।
বেনাপোল বন্দরের ৩১ নম্বর ট্রানশিপমেন্ট ইয়ার্ডের ট্রাফিক পরিদর্শক পলাশ জানান, বেনাপোল বন্দরে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) ভারত থেকে ২২ ট্রাক খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি হয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে মাছ, টমেটো, কাঁচামরিচ, আঙুর, ক্যাপসিকামসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে কাস্টমসে বিধি নিষেধের কারণে সন্ধ্যার পর ব্যবসায়ীরা অনেক পণ্য খালাস নিতে পারেননি।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যার পর কাঁচামাল জাতীয় পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে কিছু ব্যবসায়ী অনিয়ম করে শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করে থাকেন। রয়েল এন্টারপ্রাইজ ও আলেয়া এন্টারপ্রাইজের কাছে প্রায় তিন কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া রয়েছে। তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যা ৬টার পর আপাতত শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৪০-৫০ ট্রাক খাদ্যদ্রব্য ও ফল জাতীয় পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। যা থেকে সরকারের ২ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আসে। রোববার মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) থেকে এ পথে সন্ধ্যা ৬টার পর ফল জাতীয় পণ্য শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।