যশোরের মণিরামপুরে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রুহুল আমীন পাটোয়ারী (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ গ্রেফতার হয়েছেন।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১০ টার দিকে মণিরামপুর হাসপাতাল থেকে থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে এইদিন সকালে ওই বৃদ্ধকে মারপিট করে মাঠে ফেলে রাখেন শিশুটির স্বজনরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মণিরামপুর হাসপাতালে আনেন। মারপিটের পর বৃদ্ধর বাম হাত ভেঙে গেছে। তিনি উপজেলার কদমবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন শিশুটির বাবা। শিশুটি স্থানীয় একটি মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত বৃদ্ধ তার প্রতিবেশী দাদা।
শিশুটির বাবা বলেন, কয়েক বছর আগে দুই মেয়ে রেখে আমার প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। পরে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি। ওই ঘরে আমার ছোট্ট আরো একটি মেয়ে আছে।
‘গত সোমবার দুপুরে রুহুল আমিনের বাড়ি হয়ে হরিহর নদীতে গোসল করতে যাচ্ছিলো আমার বড় দুই মেয়ে। ওই সময় ছোটটার হাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে দরজায় বসিয়ে রেখে বড় মেয়েকে ঘরে নিয়ে যান রুহুল আমিন। এরপর জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে সে। পরে আমার মেয়েকে ভয়ও দেখায়। ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির অন্যদের বিষয়টি খুলে বলে মেয়ে।’
তিনি বলেন, প্রায়ই রুহুল আমিন দাদা হিসেবে আমার বড় মেয়েকে এটা ওটা কিনে দিতো। তার যে এমন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলো জানতাম না।
শিশুটির স্বজনরা বলেন, কয়েক বছর আগে ওই বৃদ্ধর স্ত্রী মারা গেছেন। পরে আর তিনি বিয়ে করেননি। তার অসৎ আচরণের কারণে বৃদ্ধর তিন ছেলে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দূরে থাকেন।
কদমবাড়িয়া গ্রামের গ্রাম পুলিশের সদস্য বিনয় দাস বলেন, বুধবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে থানার ওসিকে বিষয়টি জানাই। তখন তিনি আসামিকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন।
বিনয় দাস বলেন, বৃদ্ধর বাড়ির পাশে এক বিধবা নারী একা থাকেন। তাকেও রুহুল আমীন বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দিতেন। ওই নারী আমাকে জানালে কয়েকবার আমি বৃদ্ধকে সতর্ক করেছি।
রুহুল আমিনের ভাগনে রেজাউল করিম বলেন, সকালে মামা স্থানীয় সোহরাব মোড়ে একটি বেকারিতে কাজে ছিলেন। সেখান থেকে কয়েকজনে তাকে ডেকে মাঠের ভিতরে এনে মেরে ফেলে রেখে যায়। আমরা অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক চিকিৎসক দেখিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। মেডিকেল টেস্টের জন্য শিশুটিকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।