আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ৮:২০

যশোরের আলোচিত রাসেল হত্যা মামলায় সাবেক মেম্বর শহীদ সহ ৯ আসামির আত্মসমর্পন

 

বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেল হত্যা মামলায় আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য ও যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহ্বায়ক শহিদুজ্জামান শহীদ সহ নয়জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার তারা আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৫ ই এপ্রিল ২০২০ দিবাগত রাত ৯ টার সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহীদ ও তার গং এর পুর্বপরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে জখম করে ও জবাই করে হত্যা করা হয় ছাত্রনেতা রাসেলকে এবং তার বড় ভাই আল আমিন তাকে বাঁচাতে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এক ছেলে নিহত আর অন্য ছেলে মৃত্যুর সাথে পান্জা লড়ছে এমন দৃশ্য কোন মা-বাবা কিভাবে শোয্য করবে!
রাসেল নিহত হবার দিন থেকেই পলাতক ছিলেন খুনের প্রধান আসামী শহিদ সহ তার গং এর সবাই! মাস দেড়েক আগে শহীদ হাইকোট থেকে অগ্রিম জামিন নিয়ে আবার এলাকায় ফিরেন তাও আবার নবাবী হালে প্রায় ৫০ টি মোটরসাইকেল ও ২ টি প্রাইভেট নিয়ে শোডাউন দিতে দিতে যেন তিনি বিশ্বজয় করে ফিরেছেন!
একটা নিরিহ ছেলেকে বর্বরভাবে হত্যার পরও এলাকায় এভাবে আসতে দেখে এবং তার উন্মুক্ত চলাফেরায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করতে শুরু করে সকলেই ভয়ে ভয়ে জীবনযাপন করতে শুরু করে কারণ রাসেল হত্যার আগ পর্যন্ত শহীদ তার বাহিনি দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনি দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছিলেন এলাকায় আতঙ্ক ও অশান্তি বিরাজ করতো!
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় শহীদ যশোরের একজন সংসদ সদস্যের ছত্রছায়ায় রাজনিতি করেন আর সেই পাওয়ারেই দাপিয়ে বেড়ায় শহীদের আয়ের মূল উৎস ছিলো তার বাহিনি দিয়ে সন্ত্রাসী কায়েম করে চাঁদাবাজি করা,মাদকের ব্যাবসা,দখলদারী,চিটারি,বাটপারি (চিটার-বাটপার) নামে তার একটা সুখ্যাতি আছে সবাই এভাবেই বেশি চিনে!
রাসেলকে হত্যার কিছুদিন আগেও শহীদের নিজ বাড়িতে তার অফিসের ভেতরে তার সন্ত্রাসী বাহিনি শহীদের চোখের সামনে বেধরক মারপিট করেন পিচ্চি বাবু,সামিরুল সহকারে প্রায় ২৫-৩০ জনের একটি দল তখনও শহীদ কোন প্রতিবাদ করেন নাই বরংচ উস্কানি দিছে সেদিন রাসেলকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী সদর হসপিটালে ভর্তি করা হয় এবং থানায় একটি মামলা করা হয় সন্ত্রাসীদের নামে শহীদ ও তার গংয়ের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না এবং প্রতিবাদ ও করতে পারেনা কেউ মুখ খুললেই হামলা চালায় তার উপর!
কিছুদিন পর আসামীদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং সপ্তাহখানিক পরে ছেড়ে দেয় আটককৃতদের তারপর থেকে তারার মরিয়া হয়ে উঠে রাসেলকে হত্যার আর সেই থেকেই পরিকল্পনা করে এবং সুযোগ পেয়ে গত ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাতে জবাই করে হত্যা করা হয় রাসেলকে!
এলাকার সচেতন নাগরিকবৃন্দ সরকারের কাছে এই শহিদ সহকারে রাসেল হত্যার সকল আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেছেন তারা এমন একটি বিচার দেখতে চাই যাতে আগামীতে আরো কোন বাহিনি এমন জঘন্য কাজ করতে সাহস না পাই!
নিহত রাসেলের পিতা আবু সালেক মৃধা তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক অনেক কষ্ট করে তার ছেলেদেরকে মানুষ করেছেন সেই সাথে ভ্যান চালিয়ে সকল কষ্টের মাঝেও করেছেন রাজনিতি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত কর্মী তিনি দলকে ভালোবেসে ছেলেকেও দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনিতি করতে কিন্ত কে জানবে যে সুস্থ ধারার রাজনীতি করলে তাকে দুনিয়া ত্যাগ করতে হবে মেনে নিতে পারছেনা তার অকাল মৃত্যু রাসেলের হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছেন মানণীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদেন করেছেন!
২২ অক্টোবর ২০২০ আত্মসমর্পনকারী আসামিরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে শহিদুজ্জামান শহীদ, একই গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে খাইরুল ইসলাম, আবু তাহেরের ছেলে সবুজ হোসেন, শাহাদতের ছেলে শামীম, রুহুল আমিনের ছেলে সেলিম মিয়া, বাগদিয়া গ্রামের আয়নাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর, বাশবাড়িয়া গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে রমজান সরদার, মোশারেফের ছেলে আশিক হোসেন ও দুলালের ছেলে আজাদ হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেলকে (২৩) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। তিনি বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের সালেক মৃধার ছেলে। সন্ত্রাসীদের হামলা ঠেকাতে গিয়ে রাসেলের বড় ভাই আল-আমিনও (২৬) জখম হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত অভিযোগে পরদিন ওমর আলী, ইমদাদুল হক, এমএ রিজাউল ইসলাম ও সাগরসহ চারজনকে আটক করে। এরমধ্যে সাগর হত্যার কথা স্বীকার করে ওইদিনই আদালতে জবানবন্দি দেয়। এরপর এ মামলার আরেক আসামি শাহিন আলমকে আটক করে পুলিশ। এই মামলার অন্যতম আসামি মাহাবুবুর রহমান ওরফে পিচ্চি বাবুকে পুলিশ আটক করে। পরে সে আদালতে জবানবন্দি দেয় পূর্বশত্রুতার জের ধরে ১৯ জন মিলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে ।
এদিকে, মামলার এ নয় আসামি দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর কিছুদিন আগে অগ্রীম জামিনে মুক্তি নিয়ে এলাকায় আসেন এবং গতকাল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আরো সংবাদ