যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) রাজু বিশ্বাস (১৬) নামে এক কিশোর ‘বন্দি’ পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে।
সোমবার সাড়ে ১২টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে তাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্রের মেডিকেল সহকারী নজির আহমেদ বলেন, ‘সকালে বন্দি রাজু বিশ্বাসকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাকে হাসপাতালের ডাক্তার সোলায়মান কবীরকে দেখিয়ে ওষুধ কিনতে যাই। ওইসময় রাজুকে কেন্দ্রের মাইক্রোবাসের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে লক করে রাখা হয়। ফিরে এসে দেখি সে গাড়িতে নেই। ভেতর থেকে লক খুলে সে পালিয়ে গেছে।’
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা বাসস্ট্যান্ড, টারমিনাল, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজছি। এ বিষয়ে কোতয়ালী একটি জিডি করা হয়েছে।’
তিনি জানান, তিন সপ্তাহ আগে (১১ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজ চুরির একটি মামলায় ফরিদপুর থেকে ওই কিশোরকে যশোর কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তার বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সেকারণে আজ সকালে কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। পলাতক রাজু ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দেবকিনন্দপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব বিশ্বাসের ছেলে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছেন, উন্নয়ন কেন্দ্রের কম্পাউন্ডার-১ নজির আহমেদ ও আনসার পিসি অসিতকুমার ওই কিশোরকে হাসপাতালে নিয়েছিলেন।
যশোর শহরতলীর পুলেরহাটে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রটি (বর্তমান নাম শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র) অবস্থিত। গেল আগস্টে ওই কেন্দ্রে ‘বন্দি’ তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেই ঘটনার পর দায়িত্বরত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলাও চলমান।
হত্যাকাণ্ড ছাড়াও কেন্দ্রটি থেকে ‘বন্দি’ পালানোর ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েকবার ঘটেছে। দুর্নীতি, অনিয়ম, দায়িত্বে অবহেলার কারণে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত কেন্দ্রটিতে নানা অঘটন ঘটে বলে এর আগে একটি ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জানিয়েছিল।