আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১২:৪৫

যশোরে ১৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়েছে সড়ক ও ফুটপাত, চলাচলে ফিরেছে স্বাচ্ছন্দ্য

ধারাবাহিক উন্নয়নে কয়েক বছরের ব্যবধানে পাল্টে গেছে যশোর শহর। বহুমুখী উন্নয়নের মধ্যে শহরের এখনকার রাস্তা-ড্রেন ও ফুটপাত চোখে পড়ার মতন। অথচ বেশি দিন আগের কথা নয় যখন শহরের রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাটা ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। ভাঙাচোরা, গর্ত আর খানাখন্দে ভরা ছিল বেশির ভাগ সড়ক। কার্পেটিংও উঠে গিয়েছিল অনেক রাস্তার। এছাড়া কিছু জায়গায় ড্রেনের উপর স্লাব ছাড়া ফুটপাত বলতে সেরকম কিছুই ছিল না। এমনকি পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের পরিমাণও ছিল অপ্রতুল।

তবে এখনকার দৃশ্যপট পুরোটায় আলাদা। কারণ ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ অর্থ বছরে শহরে ৭৫ কিলোমিটারব্যাপী সড়ক নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে। এমনকি এসব সড়কে করা হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধন। এ সময়কালের মধ্যে শহরে স্লাব-ফুটপাতসহ ৮৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ হয়েছে। যশোর পৌরসভা সূত্র জানায়, ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের সড়ক নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। এছাড়া স্লাব- ফুটপাতসহ ড্রেন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৮ কোটি টাকা। এ দুটি খাতে ব্যয় হয়েছে ১৪১ কোটি টাকা।
যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন জানান, এখনও অনেক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। রাস্তারও সংস্কার চলছে। সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে কার্পেটিং হচ্ছে রেলরোড। এসব ছাড়াও প্রস্তাবিত আরো অনেক উন্নয়ন কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের শুরুর দিকে যশোর শহরের ৭২টির বেশি রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী ছিল। সেসময় শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে চলার সময় হোঁচট খেতে হোত। রাস্তার গর্তে পড়ে রিকসা উল্টানোর ঘটনাও ঘটতো। খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে রিকসা-ভ্যান চালানোর ক্ষেত্রেও চালকদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না।

যশোর শহরের খড়কি এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের শিক্ষার্থী জাফর ইকবাল বলেন, একসময় শহরের রাস্তাঘাটের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়ত। আর এখন পরিস্থিতি একদম অন্যরকম। চলাফেরায় স্বস্তি ফিরেছে। তিনি আরও জানান, বর্ষার সময় খড়কি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। নতুন করে প্রশস্ত ড্রেন নির্মাণ হওয়ায় সেটি এখন অনেক নিয়ন্ত্রণে। শহরের উন্নয়ন নিয়ে আলাপচারিতায় অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে প্রবীণ ও বয়স্করা বলেছেন, ফুটপাত নির্মাণ হওয়ায় তাদের ও শিশুদের উপকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

শহরের রেলগেট এলাকার বাসিন্দা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বলেন, তার বয়স এখন সত্তোরের উপরে। ভাতাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে তাকে ব্যাংকে যাতায়াত করতে হয়। আর এক্ষেত্রে ফুটপাত ধরে হেঁটে গেলে তিনি অনেক নিরাপদবোধ করেন। তার দাবি, শহরের ফুটপাত নির্মাণ খুবই প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। এতে তার মতন ‘সিনিয়র সিটিজেন’দের নিরাপদে চলাচলের বিষয়টি অনেকখানি নিশ্চিত হয়েছে।

যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসান হাবীব পারভেজ মনে করেন, ফুটপাত নির্মাণের ফলে শিক্ষার্থীরা এখন নিরাপদে পথচলাচল করতে পারে। তিনি বলেন, ফুটপাত দিয়ে হাঁটলে পেছন থেকে কোনো যানবাহন আসছে কি না সেটি দেখার জন্যও তাদের ফিরে তাকাতে হয় না। ফলে তারা নির্বিঘেœ পথচলতে পারে।

সূত্র – সমাজের কথা

আরো সংবাদ