খানজাহান আলী ডেস্ক: যশোরের আলোচিত মাদক কারবারী অর্ধডর্জন মামলার আসামি বাবু ওরফে ছোট বাবু ওরফে ইয়াবা বাবুকে ২০০০ পিচ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার বিকালে রাজধানীর তুরাগ থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বাবু যশোর শহরের ধর্মতলা মান্দারতলা রেল লাইন এলাকার মৃত মোমিন পালোয়ানের ছেলে। তার বোন এক সময়ের মক্ষীরাণী বর্তমানে আরবপুর ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী।
বাবুর বিরুদ্ধে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের যুবক সাজেদুর রহমান সাজিদ হত্যা মামলাসহ ৫টি মাদক মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আটককৃত বাবু পালোয়ানকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ সোমবার কোর্টে চালান করেছে পুলিশ।
তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রোসাদিয়া ঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় যশোরের আলোচিত মাদক সম্রাট বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে ২ হাজার পিচ ইয়াবা জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, জব্দকৃত ইয়াবাগুলো কক্সবাজার থেকে নিয়ে যশোর যাচ্ছিল বাবু ওরফে ইয়াবা বাবু। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চড়াদামে বিক্রির উদ্দ্যেশ্যে এই ইয়াবা নিয়ে আসছিল।
এদিকে, বাবু ওরফে ইয়াবা বাবুর গ্রেফতারের খবর শুনে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তির নি:শ্বাস পড়েছে।
এলাকাবাসী সাথে কথা বলে জানা গেছে, যশোরের আরবপুর,পালবাড়ি, খোলাডাঙ্গা, ধর্মতলা এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাট ইয়াবা বাবু ওরফে বাবু পালোয়ান। আসন্ন ঈদে যশোর অঞ্চলে মাদকের বড় চালান এনে স্থানীয় খুচরা মাদক বিক্রেতাদের মাধ্যমে চড়া দামে বিক্রির জন্য কক্সবাজার থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবার নিয়ে আসছিল। কিন্তু ইয়াবার চালানটি তুরাগ থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, ধর্মতলা এলাকার উঠতি বয়সী ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের জেলার এক সাবেক ছাত্র নেতার অনুসারী বাবু ওরফে ইয়াবা বাবু। বাবু ধর্মতলা ইজিবাইক স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলাসহ স্থানীয় কাঁচা বাজার টোল আদায়, এলাকার মানুষদের একাধিক ব্যাক্তিকে শারীরীকভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তারা বলছেন, রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ধারী সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার আশ্রিত হয়ে এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট তৈরি করে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকার খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে মাদকদ্রব্য বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। অদৃশ্য শক্তিতে গ্রেফতার এড়িয়ে একাধিক মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখে জনমনে সবসময় ভীতি কাজ করত। বিভিন্ন সময় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাবু একটি মাদক কারবারী ও সন্ত্রাসী গ্যাং গড়ে তুলেছিলো। ওই গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা এখনও সদলবলে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, উঠতি কিশোরদের নিয়ে গড়ে তোলা গ্যাং –এ যুক্ত করে মাদক ব্যবসায় তুঙ্গে ওঠে। ফলে সিন্ডিকেটটি ক্রমেই ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে ধর্মতলার রেললাইন পাড়াসহ পালবাড়ি,খোলাডাঙ্গা এবং আরবপুর এলাকাটি।
স্থানীয়দের ধারণা, এই বাবু ওরফে ইয়াবা বাবুর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশাল অস্ত্রের ভান্ডার। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হতে পারে নতুন নতুন অস্ত্র।
এদিকে বাবু পালোয়ানের গ্রেফতারের খবর শুনে খুশি আরবপুর-পালবাড়ি-খোলাডাঙ্গা-ধর্মতলা এলাকার মানুষ।