যশোরের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী শংকরপুর পশু হাসপাতাল এলাকার রাকিব ওরফে ভাইপো রাকিবকে গুলি করার অন্যতম কারণ ছিলো মাদক ব্যবসাকে ঘিরে একটি শালিস নিয়ে। এই মামলার প্রধান সাক্ষী এবং ঘটনার সময় উপস্থিত হাসান নামে এক যুবককে আটক করে তার কাছ থেকে ডিবি পুলিশ মূল ঘটনাটি জানতে পেরেছে। ভাইপো রাকিব ওই এলাকার কাজী তৌহিদের ছেলে। সে যশোরের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং ২৪ মামলার আসামি।
এদিকে এই ঘটনায় ভাইপো রাকিবের মা ফয়জুন্নাহারের দায়েরকরা মামলার আসামিদের বেশির ভাগের নাম দেয়া হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। ঘটনার সময় যে কয়জন ছিলো তাদের নামও বলেছে আটক হাসান।
হাসান পুলিশকে জানিয়েছেন, সে সদর উপজেলার হামিদপুর চানপাড়ায় বসবাস করে। তার পিতার নাম জালাল মোল্লা। সে এক সময় ইয়াবার ব্যবসা করতো। সে কারণে কক্সবাজারের টেকনাফের বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে তার পরিচয় ছিলো। শংকরপুরের হৃদয় এবং চোপদারপাড়া কবরস্থান রোডের খোকন শেখের ছেলে ইসারত ইয়াবা কেনার জন্য তাকে জানায়। সে ওই দুইজনকে টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ী মুরাদের নাম ও মোবাইল নম্বর দেয়। বিকাশে ইয়াবা কেনার জন্য মুরাদের কাছে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু টাকা পাওয়ার পর মুরাদ ইয়াবা না দেয়ায় তারা তার (হাসান) কাছে জানায়। হৃদয় ও ইসারত তাকে ডেকে নিয়ে যায় ভাইপো রাকিবের কাছে। গত ১৯ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে হাসানকে ভাইপো রাকিবের বাড়িতে সামনে নিয়ে যায়। তানভির নামে একজন ভাইপো রাকিবকে ডেকে বাড়ির সামনে যেতে বলে। এর আগে ইমন ও হৃদয় পুলেরহাটের হৃদয়, শংকরপুরের আকাশ, ইমরানসহ বেশ কয়েকজনকে ভাইপো রাকিবের বাড়ির সামনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে কথা বলায় এক পর্যায়ে ইমন সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিবকে লক্ষ্য করে পরপর দুইটি গুলি করে। গুলি দুইটি রাকিবের বুকে লাগে। গুলি করেই সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
কোতয়ালি থানার এসআই জয়ন্ত সরকার জানিয়েছেন, গত শুক্রবার গোপালগঞ্জের কাঠি থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে যশোরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ওই গুলির বিষয়ে জানায়। শনিবার তাকে আদালতে হস্তান্তর করলে সে আদালত তার বক্তব্য সাক্ষী হিসাবে রেকর্ড করে।
হাসান আরো জানিয়েছে, ঘটনার পর ভাইপো রাকিবের মা ফয়জুন্নাহার ৮জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এরা হলো চাঁচড়া ইসমাইল কোলনীর কাজী খালিদ হোসেনের ছেলে ইমন (২৫), শংকরপুর পশু হাসপাতালের পেছনের বর্তমানে পুলেরহাট এলাকার মৃত পিয়ারু কাজীর ছেলে কাজী তারেক (৪০), চাঁচড়া জামতলা এলাকার তারেকের ছেলে তানভীর (২৪), মৃত জলিল মুন্সির ছেলে রিয়াজ (৪৫), চাঁচড়া রায়পাড়ার তৈয়ব আলীর ছেলে সাব্বির (২৫), শর্ংকরপুর সার গোডাউনের পেছনের মৃত আফজাল কাজীর ছেলে আকাশ (২৭), ইসকেনের ছেলে ইয়াসিন (৩৫) এবং বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড়ের কানা বাবুর ছেলে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন (৩০)। এদের বেশির ভাগই এই ঘটনার সাথে জড়িত না। শত্রুতাবসত তাদের নাম দেয়া হয়েছে।