টিকটিক ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছেড়ে স্কুল-কলেজপড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের বিপদগামী করার অভিযোগে ৯ টিকটকারকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) একটি টিম।
মঙ্গলবার (১ জুন) সন্ধ্যায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পুলিশ। এসময় নগরীর পদ্মা গার্ডেন, ভদ্রা পার্ক, জিয়া পার্ক ও বিমান চত্বর এলাকা থেকে এই ৯ টিকটকারকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে এ বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, টিকটকারদের টার্গেট দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। তাদের রাতারাতি সেলিব্রেটি বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছাড়েন টিকটকাররা।
তিনি বলেন, ‘টিকটকারদের রয়েছে পারসোনাল ক্যামেরাম্যান, স্টুডিও। সামান্য টাকা ও রাতারাতি নায়িকা বানিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে দরিদ্র মেয়েদের আসক্ত করছেন এসব টিকটকার। এদের শক্তিশালী গ্রুপও রয়েছে। তারা শ্যুটিং করার প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও বানিয়ে দেশের বাইরেও মেয়েদের পাঠানোর চেষ্টা করছেন। যারা এই টিকটক ভিডিও করছেন তাদের বেশিরভাগই কাজের মেয়ে, ভ্যানচালক, আয়া, রিকশাচালক কিংবা দিনমজুরের ছেলেমেয়ে।’
পুলিশ কমিশনারের ভাষ্য, ‘আটকদের মধ্যে তিনজন মেয়ে রয়েছেন, বাকি ছয়জন ছেলে; যারা কিশোর। তাদের পরিবারকে ডেকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে। আর যারা প্রাপ্তবয়স্ক তাদের বিরুদ্ধে ওই মেয়েদের ভিকটিম বানিয়ে মানবপাচার ও অশালীন কাজের অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভবিষ্যতে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে কি-না, জানতে জাইলে তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে এই ধরনের প্রায় ৫০০ টিকটকার রয়েছে। যাদের কুরুচিপূর্ণ অশালীন অঙ্গভঙ্গির টিকটিক ও লাইকি ভিডিও রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের অবস্থান ও কার্যকলাপ চিহ্নিত করে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রতিটি থানায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘এসব অল্পবয়সী মেয়েরা টিকটক ভিডিওতে সেলিব্রেটি হওয়ার আশায় মানবপাচার, মাদক সেবন, মাদক পাচার, দেহব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। এতে সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হচ্ছে। এ এসব সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী ও অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে আরএমপি পুলিশ। আশা করছি খুব দ্রুতই এ ধরনের অপরাধ ও অপরাধীদের চিহ্নিত করে সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে।’