যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন পুরাতন কসবা নিরিবিলি পাড়াস্থ জনৈক মোঃ বজলুর রহমান, পিতা-মৃত আকবর আলীর বাউন্ডারী দেয়া ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মানের জন্য খোড়ার সময় পরিত্যাক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে পিবিআই যশোর জেলা ছায়া তদন্ত অব্যহত রাখে। পিবিআইয়ের ছায়া তদন্তকালীন সময়ে মোঃ ফারুক হোসেন পিবিআই যশোর অফিসে এসে পুলিশ সুপার মহোদয়েকে তার ছেলেকে সনাক্তকরণের জন্য অনুরোধ করে।
এবং এই সংক্রান্তে পিবিআই যশোর কার্যালয়ে একটি জিডি করা হয়। উক্ত জিডির সূত্র ধরে পিবিআই যশোর জেলার এসআই(নিঃ) মোঃ জিয়াউর রহমান মোঃ ফারুক হোসেন এবং তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমকে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ গ্রহণ করে কঙ্কালের সাথে তাদের পরিচয় সনাক্তের নিমিত্তে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগ, সিআইডি, মালিবাগ, ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় ড্রামের মধ্যে পাওয়া মানবদেহের কঙ্কালের সাথে মোঃ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ড্রামের ভিতরে পাওয়া কঙ্কাল বাদীর ছেলের তা ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়। ড্রামের মধ্যে পাওয়া কঙ্কালের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ইহা হত্যাকান্ড বলে প্রতীয়মান হয়। তখন পিবিআই, যশোর কর্তৃক ভিকটিম রাজীবের পিতা মোঃ ফারুক হোসেনকে সংবাদ দিলে তিনি যশোরে এসে যশোর কোতয়ালী থানায় তার ছেলের হত্যাকান্ড সংক্রান্তে অভিযোগ দায়ের করে।
উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) মোঃ জিয়াউর রহমান এর উপর অর্পণ করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত¡বধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্তে¡ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ শামীম মুসা, সঙ্গীয় এসআই (নিঃ) স্নেহাশিস দাশ, এসআই(নিঃ) মোঃ জিয়াউর রহমান, এসআই(নিঃ) ডিএম নূর জামাল সহ যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত ১৭/০১/২০২৩ খ্রিঃ ঘটনার সহিত জড়িত আসামী মোঃ সালাম(৫৫) আসামী জয়নাল হাওলাদার (৩০) ও মোঃ ইব্রাহিম মোল্লা (৩৪) দেরকে গ্রেফতার করতঃ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলাটি তদন্তকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অত্র মামলার এজাহারনামীয় আসামী অন্য একটি মামলায় জেল হাজতে থাকা শেখ সজিবুর রহমান(৩৪), পিতা-শেখ আজিজুল হক, স্থায়ী গ্রাম-পুরাতন কসবা আবু তালেব সড়ক, থানা-কোতয়ালী জেলা-যশোরকে অত্র মামলায় শোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে ০২ (দুই) দিনের পুলিশ রিমান্ডে এনে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আসামী সজিবুর রহমান জানায়, নিহত রাজীব তার অনুগত ছিল। একপর্যায়ে নিহত রাজীব সজীবুর রহমানের বিশ্বাস ভঙ্গের কয়েকটি কাজ করে, ফলে তাদের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়। নিহত রাজীব আসামী সজিবুর রহমানের অবাধ্য হওয়ায় সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে রাজীবকে হত্যা করে মৃতদেহ গুম করে।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদশেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী সজিবুর রহমান ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) মোঃ জিয়াউর রহমান সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে আসামি সাইফুল হক লিটন(৩৬), পিতা-মৃত মনিরুল হক, সাং-বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোড, থানা-কোতয়ালী জেলা-যশোরকে বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডস্থ জনৈক সদরুল বিডিআর এর ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করেন। আসামি মোঃ হুমায়ুন কবির খান @ বাবু(৩৫), পিতা-মোঃ সোহরাব আলী খান, স্থায়ী ঠিকানা-পাগলাদাহ উত্তর পাড়া, থানা-কোতয়ালী জেলা-যশোরকে বর্তমান ঠিকানা-মধ্য বাড্ডা বাজার গলি, ১১ সরণী জনৈক বুলূর বাসা নং-৮৪৩ ৫-এ, থানা-বাড্ডা ঢাকা মহানগর হতে গ্রেফতার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত মর্মে স্বীকার করে। আসামী সাইফুল হক লিটন(৩৬) ও মোঃ হুমায়ুন কবির খান @ বাবু(৩৫) দ্বয়কে অদ্য ২৫-০১-২০২৩ খ্রিঃ জনাব পলাশ কুমার দালাল, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে অভিযুক্তদ্বয় ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে।