খানজাহান আলী 24/7 নিউজ: যশোরে চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যা এবং তার বড় ভাই আল আমিনকে হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশিট প্রকাশিত হয়েছে। যশোর সদর উপজেলাধীন বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারী ও সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুজ্জামান শহিদসহ ২৬ জনকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে এই মামলার দুই আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মাসুম কাজী যশোর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
আরও পড়ুন : যশোরের আলোচিত রাসেল হত্যা মামলায় সাবেক মেম্বর শহীদ সহ ৯ আসামির আত্মসমর্পন
অভিযুক্ত অন্যরা হলো,
০২। (এজাহারভুক্ত) বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের মাঠপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলাম মোড়লের ছেলে সামিরুল ইসলাম। ০৩। বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘোপা পাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে মাহবুব হোসেন বাবু ওরফে পিচ্চি বাবু । ০৪। বালিয়া ভেকুটিয়ার আবু বক্কার সিদ্দিকী ওরফে সিদ্দিকের ছেলে শাহিন আলম। ০৫। একই গ্রামের শ্মশানপাড়ার সানু ফকিরের ছেলে সোহাগ। ০৬। সাগর ০৭। সোহেল ০৮। দীনছে আলীর ছেলে জনি। ০৯। বালিয়া ভেকুটিয়া কাঁঠালতলার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে সেলিম। ১০। ইদ্রিস আলী মাদ্রাজের ছেলে আমির হোসেন। ১১। মৃত সাহাদৎ হোসেনের ছেলে শামিম। ১২। শান্ত ১৩। আজাদ ১৪। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোশারেফ হোসেনের ছেলে আশিক। ১৫। চাঁদপুর গ্রামের মান্নান হোসেন ওরফে আব্দুল মান্নানের ছেলে রনি হোসেন ওরফে ওমর আলী। ১৬। মিয়ারাজ মোড়লের ছেলে ইমদাদুল হক এমে। ১৭। মৃত সেকেন্দার আলী সেগুনের ছেলে খায়রুল ইসলাম। ১৮। আকরাম আলীর ছেলে হাসিব। ১৯। আবু তাহের ড্রাইভারের ছেলে সবুজ। ২০। মৃত সলেমান মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম। ২১। পাকদিয়া গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে আলমগীর হোসেন। ২২। মোসলেম সরদারের ছেলে রমজান আলী। ২৩। বড় ভেকুটিয়া গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে এনামুল। ২৪। মতিয়ার রহমান সহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন।
আরও পড়ুন : যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক শহীদের ভাই সাজ্জাদ জাল স্ট্যাম্প,পরচা সহ গ্রেফতার ;১ মাসের জেল
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারী। শহীদুজ্জামান শহীদের নেতৃত্বে তারা এলাকায় খুন, মাদক কারবারী, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। আর এতে বিভিন্ন সময় বাধা দেন যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহম্মেদ রাসেল। এতে ওই সন্ত্রাসীরা রাসেলের উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়।
২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের শ্মশানপাড়ার রবিউল ইসলাম বাবুর মুদি দোকানের সামনে বসে রাসেলসহ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকর্মী মহামারী করোনায় অসহায়দের জন্য ত্রাণ দেয়ার তালিকা করছিলেন। এসময় শহীদুজ্জামানের পোষ্য কয়েক সন্ত্রাসী বেপরোয়া গতিতে সেখানে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসে। এসময় তাদের আস্তে মোটরসাইকেল চালানোর কথা বললে রাসেলকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
আরও পড়ুন : ভেকুটিয়ার মাদক সম্রাট শহীদের সেকেন্ড ইন কমান্ড তরিকুল সহ আটক ২।
আরও পড়ুন : কুখ্যাত মাদক সম্রাট শহীদের সেকেন্ড ইন কমান্ড তরিকুল মাদকের চালান সহ গ্রেপ্তার।
একইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে সকল আসামি ধারালো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়ির সামনে থেকে রাসেলকে জোর করে ধরে নিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। এসময় রাসেলের বড় ভাই আলামিন সেখানে ঠেকাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকারে আশাপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। স্থানীয়রা আহত রাসেল ও আলামিনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আর ওই সময় আলামিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়।
পরদিন এই ঘটনায় নিহতের পিতা আবু সালেক মৃধা বাদী হয়ে হত্যাকা-ের মূল হোতা সাবেক মেম্বর শহীদুজ্জামান শহিদসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন তৎকালীন কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশনস) আহসানুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে এসআই হায়াত মাহমুদ খান এবং সর্বশেষে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মাসুম কাজী মামলাটি তদন্ত করেন।