সাদাব হোসেন : বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেলে বরগুনা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। বিকেলে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা লিখিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার পর পুলিশ নিরবিচ্ছিন্নভাবে গভীর তদন্ত শেষে ২৪ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪/২১২/১০৯/১১৪/১২০-বি(১) ধারায় বরগুনা সদর থানার অভিযোগপত্র ২৮০(১) বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। মামলার ১নং আসামি নয়ন বন্ড বন্দুক যুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। চার্জশিটের ও আসামিদের ব্যপারে কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চার্জশিটের ব্যপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কেউ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাদিপক্ষের আইনজীবি মজিবুল হক কিসলু জানান, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে ২৪ জন আসামির মধ্যে রিফাত ফরাজীকে ১নং আসামি ও মিন্নিকে ৭নং আসামি করে ৬১৪ পৃষ্ঠার পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২২শে আগস্ট আদালত চার্জশিট দেয়ার দিন ৩রা সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছিলো আদালত। মামলার প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারায় তখন পর্যন্ত আদালতে জমা দেয়া হয়নি।
আজ রবিবার (১লা সেপ্টেম্বর) মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৯শে আগস্ট) রিফাত হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিনের আদেশ দেয় হাইকোর্ট। তবে, জামিনে থাকাকালীন গণমাধ্যমের সামনে কথা না বলার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে। আর, জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের জিম্মায় থাকবেন।
রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২রা জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
গত ২৬শে জুন, সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায়, রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে গত ১৬ই জুলাই রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরের দিন তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তার দুদিন পরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।