ফকির লালন শাহের ১৩১তম তিরোধান দিবস আজ। ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর (পহেলা কার্তিক) কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় তার মৃত্যু হয়।
প্রতি বছর দিবসটি উপলক্ষে ছেঁউড়িয়ায় ভক্ত-সাধকদের মিলনমেলা বসে। অনুষ্ঠান চলে তিন দিন ধরে। কিন্তু গতবছরের মতো এবারও করোনার কারণে সেই অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। তারপরও ভক্ত-অনুসারীরা অনেকেই লালন শাহকে ভক্তি জানাতে সেখানে এসেছেন।
বাউলসাধক কফিল শাহ বলেন, লালনের গানে সবার ওপরে রয়েছে মানুষ। সবকিছুর সন্ধান পাই তার গানে। জগতের সকল ভাবনার উত্তর তার গানে। কিন্তু লালনকে বুঝতে পারি না। সারা জীবন ধরে লালনেরই সন্ধান করে চলেছি। যত দিন যাচ্ছে ফকির লালন সাঁইয়ের জীবন ও গানের ব্যাপ্তি ততই প্রভাব বিস্তার করছে মানুষের মাঝে।
তিনি বলেন, সাঁইজি ১১৬ বছর বেঁচে ছিলেন। তার মৃত্যু হয়েছে ১৩১ বছর আগে। এই দীর্ঘ সময়ও বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাননি। বরং তার সৃষ্টির ঔজ্জ্বল্য বেড়েছে, বেড়েছে পরিধি। ফকির লালন শাহ শতাব্দীর পর শতাব্দী এক ঐন্দ্রজালিক মোহ বিস্তার করে চলেছেন। দিন দিন তার সে ঐন্দ্রজালিক বলয়ের বিস্তৃতি ঘটছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতির এবং গণজমায়েতের ক্ষেত্রে সরকারি বিধিনিষেধ আরোপ থাকাসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় ফকির লালন শাহের ১৩১তম তিরোধান দিবসে এবার কোনও অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক ফকির লালন শাহ দেহধাম ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেঁউড়িয়ায় কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন তিরোধান দিবস। অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতি বছর ছেঁউড়িয়ায় সমাগম হয় হাজার হাজার মানুষের। এই উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসেন লালনের আঁখড়ায়।