জমি নিয়ে কোন বিরোধ নয়, উচ্ছৃঙ্খল যুবক খোলাডাঙ্গা এলাকার টোকনের ছেলে স্মরণকে (২৫) থাপ্পড় মারার খেসারত দিতে হলো জামায়াত নেতা ও ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম সজলকে (৪৩)। এই হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চারজনকে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এই তথ্য জানতে পেরেছে।
এদিকে ব্যবসায়ী সজল হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই খোলাডাঙ্গা মুন্সিপাড়ার আজাহারুল ইসলাম ৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনের নামে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। নিহত সজল ওই এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে।
আসামিরা হলো, খোলাডাঙ্গার আব্দুল আজিজের ছেলে সন্ত্রাসী কামরুল ওরফে খোঁড়া কামরুল (৪৫), মাহবুব মুন্সির ছেলে টিটো (৩৬), টোকনের ছেলে স্মরণ (২৫), আলম সিদ্দিকীর ছেলে লাবিব (২৬), তফজেলের ছেলে মুন্না (২৩) এবং স্টেডিয়াম পাড়ার আব্দুল মাজেদের ছেলে মুরসালিন (২৪)।
এজাহারে আজাহারুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তার ভাই সজলের খোলাডাঙ্গা সার গোডাউন এলাকার গাজীর বাজারে হার্ডওয়ার ও স্যানিটারির দোকান আছে। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে দোকানের বেচাকেনা করে এশার নামাজ আদায়ের জন্য বের হন। সার গোডাউনের পেছনের আইয়ুব গাজীর বাড়ির সামনে পৌছালে আসামিরা তার পথ আগলে ধরে। এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে জখম করে। সে সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আসামিদের সাথে তার ভাইয়ের আগে থেকে বিরোধ ছিলো বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত সজল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি সংগঠনের গাজীর বাজার ইউনিটের সভাপতি। সপ্তাহ খানেক আগে তার এক পরিচিত ব্যক্তি ওই এলাকায় আসেন তার সাথে দেখা করতে। সেই ব্যক্তির সাথে আসামি স্মরণ খারাপ আচরণ করে। তাকে নানা ভাবে হুমকি দেয়। বিষয়টি মিমাংশার জন্য এগিয়ে যান নিহত সজল। সে সময় উচ্ছৃঙ্খল স্মরণ বাজে আচরণ করতে থাকলে নিহত সজল তাকে থাপ্পড় মারে। এরপর সেখানে বাকবিতান্ড হয়। স্মরণ ও তার সঙ্গীরা সেখান থেকে চলে যায়। এই ঘটনার রেশ ধরে আসামিরা সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ফলে ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর তাকে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
সূত্রটি জানিয়েছে, স্মরণ ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী টোকনের ছেলে। তার ভাই চাচা এই মামলার আসামি টিটোও সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একাধিক মামলা আছে। খোলাডাঙ্গা এলাকায় বিগত দিনে যারা অশান্ত করে রেখেছিল তাদের মধ্যে টিটো, টোকন, খোড়া কামরুল অন্যতম।
এদিকে পুলিশে একটি সূত্রে জানাগেছে, ওই ঘটনার পর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জন্য চারজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এজাহারের বাইরেও এই মামলার আসামি আছে বলে পুলিশ ধারনা করছে। আটককৃতদের মধ্যে তিনজনের নাম জানাগেছে। এরা হলো, খোলাডাঙ্গা এলাকার আব্দুর রহমান সাগর, আল-আমিন ও সাকিল।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম শহিদ জানিয়েছে, ‘হত্যার বিষয়টি পুলিশ গভীর ভাবে তদন্ত করছে।’ আসামি আটকের বিষয়ে তিনি বলেছে, ‘পুলিশের কাজ চলছে।