সিলেট নগরে পাঁচতলা ভবনের নিচে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর মারা যাওয়া রাবিদ আহমদকে (৩১) হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে রাবিদের বাবা নূর মিয়া বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শাহনিয়া বেগম (৩০), তাঁর দুই ভাই আকবর (২৬) ও ইয়ামিন (২৪)। তাঁরা সিলেটের বালাগঞ্জ থানার গহরপুর এলাকার আলাউদ্দিন আনোয়ারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে রাবিদ আহমদ এবং তাঁর খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে আকবর ও ইয়ামিন কাজিটুলা উচা সড়ক এলাকার পাঁচতলা ভবনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। শাহনিয়া বেগম দুই ভাই আকবর ও ইয়ামিনের বোন। তাঁর বিয়ে হয়েছে। নগরের অন্য একটি এলাকায় তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকলেও প্রায়ই ওই বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। নিহত রাবিদের সঙ্গেও বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেলে করে আসা-যাওয়া করতেন শাহনিয়া।
রাবিদ আহমদকে গতকাল সোমবার সকালে ওই পাঁচ তলা ভবনের নিচ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান আকবর। পরে তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। তবে হাসপাতালে যাওয়ার পর তাঁর স্বজনেরা রাবিদকে মৃত অবস্থায় পান। এর পর থেকে রাবিদের স্বজনেরা এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করছিলেন।
তবে ওই ভবনের বাসিন্দা ও আকবরের পরিবারের দাবি, রাবিদ ওই পাঁচতলা ভবনের ওপর থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে থাকতে পারেন। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তেমনটি ধারণা করা হলেও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
রাবিদের চাচা আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজা সিলেটের ওই বাসায় ভাড়া থাকত, সেটি আমরা জানতাম না। কী কারণে আমার ভাতিজা মারা গেল, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সেটি উদ্ঘাটনের দাবি জানাই। আমাদের ধারণা, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
এদিকে রাবিদের মৃত্যুর পর তাঁর ব্যবহৃত তালাবদ্ধ কক্ষের ভেতর থেকে ২৫টি ইয়াবা বড়ি ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদের বলেন, রাবিদকে হত্যার অভিযোগ এনে তাঁর বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন সম্পর্কে ভাই-বোন। এটি হত্যাকাণ্ড কি না, সেটি বিস্তারিত তদন্ত এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে।