যশোরের শার্শার ঐতিহ্যবাহী কাছারি বাড়ির সরকারি জমি ৪১ বছর আগে গোপনে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেওয়ায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ৮ ‘জালিয়াতের’ নামে মামলা করেছেন জেলা প্রশাসক। যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী বাহাউদ্দিন ইকবাল বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা দাখিল করেন। বিচারক আসামিদের প্রতি সমন জারি করে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার দিন ধার্য করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন শার্শার মোড়লপাড়ার ফজলুর রহমানের ৫ সন্তান জসিম উদ্দিন, করিম হোসেন মনির হোসেন, ইমাম হোসেন, শাহিনা খাতুন, নুরুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা খাতুন, ফজলুর রহমানের স্ত্রী রেহেনা খাতুন ও মমতাজ বেগম।
সূত্র মতে, উপজেলার ৭২ নম্বর শার্শার মৌজার সাবেক ১২৫৫ দাগের ৩৫ শতক সরকারি জমি ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নেন। এরমধ্যে ৩২ দশমিক ৬৩ শতক (প্রায় এক বিঘা) জমি ১৯৮০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নিজ নামে রেকর্ড করে নেন ফজলুর রহমান। প্রথম দিকে অতি গোপন থাকলেও তার মৃত্যুর পর ছেলে কবির হোসেন, জসিম উদ্দিন, মনির হোসেন ও ইমাম হোসেন সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রকাশ্যে দখলে নেয়।
এদিকে সরকারি ওই জমি কীভাবে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হলো তা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসনও। উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করেন কালেক্টরেট যশোরের নামে কাছারি বাড়ির বাস্তু শ্রেণির জমি। কাছারিবাড়ির জমি ধানী হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ফজলুর রহমানের মারা যাওয়ার পর তার সন্তানদের নামে রেকর্ড করা হয়। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে চিঠি লেখেন। এরপর যশোরের জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে এলএসটি মামলা করার জন্য সরকারের পিপিকে চিঠি দেয়া হয়।
যশোর আদালতের পিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল জানান, চিঠি পেয়ে তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যান। কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন সরকারের কাছারি বাড়ির সম্পত্তি জাল দলিল করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শার্শা মৌজার প্রিন্ট পর্চার রেকর্ড প্রকাশিত হলেও গেজেট বের হতে দেরি হয়। যে কারণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করতেও বিলম্ব হয়।
বৃহস্পতিবার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতে ৮ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বিচারক আসামিদের প্রতি সমন জারি করে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার দিন ধার্য করেছেন।