আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:২৯

আগামী নির্বাচনে আইএসআই ও বিএনপির ৩০০ আসনে প্রার্থীদের নাম গোয়েন্দাদের হাতে

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনও তিন বছর বাকি থাকতেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) গভীর ষড়যন্ত্রের তথ্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সৌদি আরবের জেদ্দায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শীর্ষ নেতা। বাংলাদেশে পাকিস্তানী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আগামী নির্বাচনে তিন শ’ আসনে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর তালিকা তৈরি করে দিয়েছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। গত ৩২ মাসে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে অন্তত ২০টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের। গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এসেছে সাড়ে তিন ঘণ্টার শতাধিক ফোনালাপ রেকর্ড। এসব রেকর্ডের মধ্যে আছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার দুবাইভিত্তিক এজেন্ট পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদ মেহমুদের ফোনালাপ। পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর দুবাইভিত্তিক এজেন্ট দুবাইয়ে বসবাসকারী শহীদ মেহমুদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যম হচ্ছেন বিএনপির দুবাই শাখার সভাপতি সিলেটের জকিগঞ্জের অধিবাসী জাহিদ হাসান। জামায়াতের সভাপতি শফিকুর রহমান থেকে শুরু করে বিএনপির সাজাপ্রাপ্ত লন্ডন প্রবাসী নেতা তারেক রহমান পর্যন্ত অনেকেরই ফোনালাপ রেকর্ড করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এসব খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর এজেন্ট শহীদ মেহমুদ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৫৪তম লং কোর্স কমিশন্ড। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুবাইয়ে বসবাস করেন এবং দুবাইয়ে পাকিস্তানের আইএসআই এজেন্ট হিসেবে কর্মরত। তার মাসিক সম্মানী ৪৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের নির্বাচনে পাকিস্তানী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তার এ্যাসাইনমেন্ট। দুবাইয়ে বসবাস করছেন সিলেটের জকিগঞ্জের জাহিদ হাসান। বিএনপির দুবাই শাখার সভাপতি তিনি। তার মাধ্যমেই পাকিস্তানের আইএসআই এজেন্ট শহীদ মেহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তারেক রহমানের। তারেক রহমানের কাছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন শ’ প্রার্থীর তালিকাটি পাঠিয়েছেন জাহিদ হাসানই। তারেক রহমানের কাছে লন্ডনে যে তালিকাটি পাঠানো হয়েছে তাতে কোন কোন প্রার্থী মারা গেছেন এবং তারেক রহমান কোন কোন প্রার্থীকে চেনেনও না-এমন কথাবার্তা হয়েছে ফোনালাপে। আন্তঃরাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর এজেন্ট শহীদ মেহমুদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বৈঠক ও ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এসব বিষয়ে বিএনপি-জামায়াত থেকে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থার পাওয়া ফোনালাপের রেকর্ডে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর দুবাইভিত্তিক এজেন্ট শহীদ মেহমুদের সঙ্গে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশারফের আলাপের সময়ে বিএনপি-জামায়াতের তিন শ’ প্রার্থীর তালিকা দেয়ার কথা বলা হয় আন্তঃরাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে।

ফোনালাপের রেকর্ডে বলতে শোনা যায়, শহীদ মেহমুদ : ইউ রিমেম্বার উই মেট লাস্ট টাইম ইন ইসলামাবাদ  (আপনার স্মরণ আছে যে, আমরা সর্বশেষ ইসলামাবাদের বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম)।

জাহিদ হাসান (দুবাইভিত্তিক বিএনপির সভাপতি) : স্লামালাইকুম।

শহীদ মেহমুদ : ইয়েস ব্রাদার, হাউ আর ইউ?

জাহিদ হাসান : আলহামদুলিল্লাহ।

সাড়ে তিন ঘণ্টার ফোনালাপের যে শতাধিক কল রেকর্ড করা হয়েছে তাতে দেখা যায়, বেশিরভাগ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সাক্ষাত-আলাপের চাহিদা ঠিক করার কথা। টেলিফোন রেকর্ডে নামের বদলে কোড ব্যবহার করা হয়েছে ‘বড় ভাই’, ‘আমাদের বন্ধ’ু, ‘নাম্বার ওয়ান’, ‘বস’। জুন ও জুলাই মাসের টেলিফোন রেকর্ড কল ঘেটে দেখা যায়, ৪ জুলাই, জাহিদ হাসানের বস আর শহীদ মেহমুদের নাম্বার ওয়ান বন্ধুর বসের সঙ্গে একটি বৈঠক চূড়ান্ত হচ্ছিল সৌদিতে। ৪ জুলাই বিকেল ৪ টার সেই বৈঠকের ফলোআপ কল মিলেছে গত ৭ জুলাই।

জাহিদ হাসান : অলরেডি আই সেন্ড…। বিকজ অলরেডি ফাইন্যালাইজ…।

শহীদ মেহমুদ : ওকে। ডেফিনিটলি ইনভলভ দি পিপল…।

একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায় নিয়ে কথা প্রসঙ্গে বসের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে, বস লন্ডন থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আইএসআই এজেন্ট শহীদ মেহমুদ ও বিএনপির দুবাই শাখার সভাপতি জাহিদ হাসানের টেলিফোন আলাপের সময়ে একবারই তারেক রহমানের নাম উচ্চারিত হয়।

জাহিদ হাসান : ইয়েসটার্ডে মাই বস অলরেডি গেট দি ভিডিও কল।

শহীদ মেহমুদ : নাথিং মাচ ফ্যাক্ট অন ওরান…।

জাহিদ হাসান : নো, সি দ্যা ইস্যু উইল দ্যা অলরেডি টোল্ড দ্যা নো এনি এস পার উই নো দ্যা ডিসাইডেড দি তারেক রহমান। অলসো দ্যা…।

শহীদ মেহমুদ : দ্যাটস আই বি লাভ বেটার আন্ডারসেন্ডিং ফর দি বিগার গেম। বিকজ দি ইউ নো জেনারেল ইলেকশন।

যে কোন মূল্যে জামায়াতকে জোটে রাখার শর্তে তারেক রহমানকে সব সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আইএসআই এজেন্ট শহীদ মেহমুদ।

আন্তঃরাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেই বৈঠকের বিষয়ে আইএসআই এজেন্ট শহীদ মেহমুদের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশারফের। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান থেকে শুরু করে লন্ডনের তারেক রহমানসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দের অনেকের সঙ্গেই ফোনালাপ ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ। সৌদি আরবের জেদ্দায় গত ৪ জুলাই তারেক রহমানের সঙ্গে আইএসআইর শীর্ষস্থানীয় দুই কর্মকর্তার একটি বৈঠক হয়েছে। দুবাই বিএনপির এক নেতার মাধ্যমে তারেক রহমান আইএসআইর সঙ্গে পরোক্ষ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তাদের মধ্যে যোগাযোগের এ রকম আরও একাধিক মাধ্যম রয়েছে। এবারের নির্বাচনে তিন শ’ আসনে আইএসআইর পছন্দের প্রার্থীদের একটি তালিকা তারেক রহমানের কাছে পৌঁছেছে দুবাইয়ে বিএনপি নেতা জাহিদ হাসানের মাধ্যমে।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আইএসআই কানেকশনের অভিযোগ অনেক পুরনো। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের মেয়াদকালে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি মুম্বাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তার বৈঠকেরও অভিযোগ আছে। সাম্প্রতিক আইএসআই যোগাযোগ প্রমাণ করে, বিএনপির এই শীর্ষ নেতা তার পুরনো যোগাযোগগুলো থেকে মোটেও সরে আসেননি। গোয়েন্দা নথিপত্রে যে তথ্য তাতে দেখা যায়, গত ছয় মাসে দুবাইয়ে বিভিন্ন হোটেলে অন্তত ১১ বার দেখা হয়েছে দু’জনের। সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বর এ দুজন দেখা করেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জাহিদ হাসান লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। পাকিস্তানী এজেন্টের সঙ্গে বৈঠকে তিনি তারেক রহমানকে ‘বস’ বলে উল্লেখ করেন এবং আইএসআইর বার্তা তারেক রহমানকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। এ থেকে বোঝা যায়, জাকির হোসেন আসলে দুইপক্ষের মধ্যে একটি যোগসূত্রের ভূমিকা পালন করছেন। দুবাইয়ে অবস্থানরত শহীদ মেহমুদের সম্পর্কে খোঁজখবর করে দেখা গেছে, তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল। ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি আইএসআইতেই ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পরও আইএসআই এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে মেহমুদ নামে যে আইএসআই এজেন্টের ফাঁস হওয়া ফোনালাপ সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সেই এজেন্টই শহীদ মেহমুদ। তিনি আইএসআইর নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা জাভেদ মেহেদীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এবং মূলত জাভেদ মেহদীর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেন। জাহিদ হাসান ও শহীদ মেহমুদের একাধিক কথোপকথন থেকে জানা যায়, এ বছরের ৪ জুলাই সৌদি আরবের জেদ্দায় তারেক রহমানের সঙ্গে আইএসআইর শীর্ষ কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা জাভেদ মেহেদীর বৈঠক হয়েছে। এ বছরের জুনে আইএসআই এজেন্ট শহীদ মেহমুদ ও বিএনপি নেতা জাহিদ হাসানের একটি বৈঠক হয়। এতে শহীদ মেহমুদ জেদ্দায় আইএসআইর ‘নম্বর ওয়ান নীতিনির্ধারক’ ও জাভেদ মেহেদীর সঙ্গে জাকির হোসেনের ‘বস’-এর আসন্ন বৈঠক নিয়ে ব্রিফ করেন। শহীদ মেহমুদ জাকির হোসেনকে বলেন, তিনি যেন তার ‘বস’কে বলেন, এ বৈঠক জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নির্ধারণ করা হয়েছে। জুনেই আরেক বৈঠকে শহীদ মেহমুদ জাকির হোসেনকে জানান, জেদ্দায় নির্ধারিত ওই বৈঠকটি ৪ জুলাই বিকেল ৪টায় হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। তারেক রহমানের তরফ থেকেও যাতে বৈঠকে উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। শহীদ মেহমুদ জাকির হোসেনকে আরও বলেন, পাকিস্তানের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যাতে তার ‘বস’ সবকিছু আলোচনা করেন, কেননা তিনি আইএসআইর সর্বময় কর্তা। সেখানেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

৪ থেকে ৬ জুলাইর মধ্যে জাহিদ হাসান ও শহীদ মেহমুদের পরবর্তী আরও কয়েকটি ফোনালাপে এটা স্পষ্ট যে, ৪ জুলাই জেদ্দায় নির্ধারিত ওই বৈঠকটি হয়েছিল। জাহিদ হাসান ওই বৈঠককে ‘সফল’ বলে উল্লেখ করেন। গত ৪ জুলাই জাকির হোসেন ও শহীদ মেহমুদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের বিবরণ থেকে জানা যায়, আইএসআই তাদের পছন্দের প্রার্থীদের একটি তালিকা জাকির হোসেনকে দিয়েছে। জাকির হোসেন তারেক রহমানের এই তালিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করেন। এসব কথোপকথন থেকে এটা স্পষ্ট যে, লন্ডনে তারেক রহমান পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। এ যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুবাইতে আইএসআইর এজেন্ট একটি বড় মাধ্যম। তবে এসব কথোপকথন থেকে স্পষ্ট, দুই পক্ষের যোগাযোগের আরও মাধ্যম আছে।

গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ উস্কে দেয়া ও জঙ্গী তৎপরতা সক্রিয় করার ক্ষেত্রেও বরাবরই সক্রিয় আছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে শেখ হাসিনাকে হত্যা পরিকল্পনায় হামলা চালানো ও জাতীয় পর্যায়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উদ্দেশে ছক আঁকে আইএসআই। তবে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতামূলক তৎপরতায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

বিস্ময়কর তথ্যটি হচ্ছে, আইএসআইর শীর্ষ এজেন্টদের যে তালিকা ‘র’ এর হাতে এসেছে সেখানে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নামও পাওয়া গেছে।

২০০২ এবং ২০০৩ সালে দুবাইয়ে তারেক জিয়াসহ বিএনপির দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা আইএসআইর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সময় ভারতে অস্থিরতা এবং সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে আইএসআই। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে অস্ত্র ভারতে পৌঁছে দেয়া এবং ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার কাজে তারেক জিয়া আইএসআইকে সহায়তা করেন এমন তথ্য-প্রমাণ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বহু আগেই প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে যে ১০ ট্রাক অস্ত্র পাওয়া যায় তা কোথা থেকে এসেছে সে সম্পর্কে ইন্ডিয়া টুডের অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, তারেক জিয়ার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উলফাদের এই অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়েছিল। এর পর থেকেই তারেক জিয়া আইএসআইর পে-রোলে রয়েছে। এখনও তিনি আইএসআইর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন বলে ‘র’ এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পর্ক রয়েছে। তারেক আইএসআইর সঙ্গে মিলে ভারত সরকারকে দুর্বল করা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নষ্ট করার জন্যও অত্যন্ত সক্রিয় বলে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এটা গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি।

 

আরো সংবাদ