আজ - রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - বিকাল ৪:০৩

একদিনেই যশোরে করোনার টিকা নিল ৪৭৬ জন

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশের ন্যায় যশোরেও শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিজেই টিকা নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। কাজী নাবিল আহমেদের টিকা গ্রহণের পর জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ দায়িত্বশীল বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও স্থানীয় রাজনীতি দলের নেতৃবৃন্দ টিকা নেন। ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনের দিনেই যশোরে ১১টি টিকাদান কেন্দ্রে ৪৭৬ জন টিকা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন।

সিভিল সার্জন সূত্র মতে, রোববার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে একযোগে টিকা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর যশোরেও শুরু হয় বহুল প্রত্যাশিত করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচি। উদ্বোধনের পর থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত যশোরের ১১টি টিকাদান কেন্দ্রে ৪৭৬ জনকে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। যদিও সিভিল সার্জন উদ্বোধনের দিন ২ হাজার জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলো। বেলা ১১ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কেন্দ্রে ১২৭ জন, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন, বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৯৮ জন, বিমান বাহিনীর মতিউর রহমান ঘাঁটিতে ৯ জন, জেলা পুলিশ লাইনে ১০ জন, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পপ্লেক্সে ৬০ জন, ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৬ জন, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ জন ও মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন টিকা নিয়েছেন। এর আগে, শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৭১১ জন টিকা নেওয়ার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেন। আবেদনের মাধ্যমে করোনার টিকা দেওয়া হবে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক হাজার ৮৬ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এক হাজার ১৮৪ জন, বিমান বাহিনীর মতিউর রহমান ঘাঁটিতে ৩১জন, জেলা পুলিশ লাইনে ১৭০ জন, সদর উপজেলা বাদে সাত উপজেলার মধ্যে কেশবপুর উপজেলায় ২০৩ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ৩৯৬ জন, শার্শা উপজেলায় ৫৫৬ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১৪৯ জন, চৌগাছা উপজেলায় ১৭৮ জন, বাঘারপাড়া উপজেলায় ১৫৫জন এবং অভয়নগর উপজেলায় ১৯৭ জন।

করোনার টিকা নেওয়ার পর যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দেশে যে পরিমাণ লোক মারা গেছে, তার তুলনায় উন্নত রাষ্ট্রে অনেক বেশি লোক মারা গেছে। তারা এত উন্নত দেশ, আল্লাহ রহমতে আমরা ভালো আছি। করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে ব্লুমবার্গ বাংলাদেশকে ২০তম দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণে। করোনার টিকা নিয়ে অনেক সমালোচনা আলোচনা হচ্ছে। পৃথিবীর সবদেশের সবধরণের ভ্যাকসিনে পাশর্^প্রতিক্রিরা রয়েছে। কিন্তু অক্সফোর্ডের যে টিকা বাংলাদেশে প্রয়োগ হচ্ছে সেটা খুব নিরাপদ। আমি বলবো করোনার টিকা সব সমলোচনা উড়িয়ে দিয়ে সবাইকে এই টিকা নেওয়া উচিত।

টিকা নেওয়া পর যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, টিকা নিয়ে অন্য রকম ভালো লাগছে। নিজেকে সুরক্ষিত মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। আগে মনের মধ্যে যে ভয় ছিল, টিকা নেওয়ার পর তা কেটে গেছে। কোনো সমস্যা নেই, টিকা নিয়ে ভালো আছি। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, সুরক্ষিত থাকতে প্রত্যেকেরই টিকা নেওয়া দরকার। করোনার টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিলো। আজকের পর আর তা থাকবে না। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সবাই টিকা গ্রহণ করছে। এজন্য সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনার টিকা নেওয়া সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুদাচ্ছের আলী জানান, টিকা নিয়ে কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনুভব করছি না। ভালোই লাগছে। অন্য টিকার মতোই লাগছে।

করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে একযোগে টিকা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।

আরো সংবাদ