আফগানিস্তান ত্যাগ করল বিদেশি সেনা। আমেরিকা, বৃটেন দু’দেশের তরফেই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর কাজ শেষ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন যুদ্ধ শেষ। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে তাই ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ হিসেবে দেখছে তালেবানরা। মার্কিন সেনা কাবুল ছাড়তেই তালেবানি উল্লাসের সাক্ষী থেকেছে আফগান রাজধানী। শূন্যে গুলি চালানোর পাশাপাশি বিমানবন্দরের দখল নেয় তালেবান। অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ তালেবানরা হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে প্রবেশ করে। সেখান রাখা সাতটি সিএইচ-৪৬ হেলিকপ্টারের দখল নেয়।
পাশাপাশি তাদের নজরে পড়ে কয়েক ডজন সারমেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রটে যায়, তালেবানের দয়ায় কয়েক ডজন কুকুর কাবুল বিমানবন্দরেই খাঁচা বন্দি অবস্থায় রেখে চলে যায় আমেরিকার সেনা। তবে এবার এই দাবি ওড়াল পেন্টাগন। একটি টুইট করে পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কার্বি দাবি করেন, কাবুল বিমানবন্দরে যেই সারমেয়দের ছবি ভাইরাল হয়েছে, তা মার্কিন সেনা রেখে আসেনি। কার্বির দাবি, ‘কাবুল স্মল অ্যানিম্যাল রেসকিউ’ নামক এক সংগঠনের তত্ত্বাবধানে ছিল সেই কুকুরগুলি। এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে ‘কাবুল স্মল অ্যানিম্যাল রেসকিউ’-র তরফে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত কুকুরগুলোকে আফগানিস্তান থেকে বহন করার জন্য আমরা একটি বিমান ঠিক করেছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ওই কুকুরদের এবং তাদের কেয়ারটেকরদের নিরাপদে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে আমরা হতাশ। প্রসঙ্গত, কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে তালেবানের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বদরি ৩১৩ ইউনিট। মার্কিন সেনা কাবুল ছাড়ার পর তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লাইভে বলেন, বিশ্বের এবার শিক্ষা নেওয়া উচিত এবং এটা জয়ের আনন্দ উপভোগ করার মুহূর্ত। নিজেদের আধিপত্য কায়েমের প্রমাণ হিসেবে তালেবান নেতাদের রানওয়ে দিয়ে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কান্দাহারের আকাশে দেখা গেল শিউরে ওঠার মতো দৃশ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন মানুষের দেহ ঝুলিয়ে আকাশে চক্কর কাটছে আমেরিকান সেনার ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার। একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কোনও একজন মানুষকে হত্যা করে তাঁর দেহ হেলিকপ্টারের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে কান্দাহার প্রদেশের উপরে নজরদারি চালাতে বের হয় তালেবানরা। স্বভাবতই এই দৃশ্য যারাই দেখেছেন, তারা শিউরে উঠেছেন। যদিও বহু দূর থেকে তোলা ভিডিও-টিতে স্পষ্ট নয়, হেলিকপ্টারে বাঁধা ব্যক্তি জীবিত নাকি মৃত। যদিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, খুন করেই ওই ব্যক্তিকে হেলিকপ্টারে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।