আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সকাল ৬:২৬

মেসির কারণে বদলে যাচ্ছে উয়েফার ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম!

ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’ সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে উচ্চারিত একটি টার্ম। বার্সেলোনা, মেসি এবং পিএসজির কারণে এ তিনটি শব্দ সমষ্টি খুবই পরিচিতি ক্রীড়া প্রেমীদের কাছে। এই ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম-নীতির কারণে মেসিকে ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। শেষ মুহূর্তে ছেড়ে দিতে হয়েছে বিশ্বসেরা এই ফুটবলারকে।

এরপর আবার এই মেসিকেই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিয়ে কিনে নিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। সেখানেও উয়েফা ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র ধুয়ো তোলা হয়েছে। মেসি, নেইমার, এমবাপে, রামোস, ডি মারিয়া, ডোনারুমার মত বিশ্বখ্যাত ফুটবলাররা রয়েছেন এই দলে। তাদেরকে যে পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে, সে হিসেবে পিএসজি কী ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম ভঙ্গ করছে না?

যদিও পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসের আল খেলাইফি সরাসরি বলে দিয়েছেন, তারা কোনো নিয়ম ভঙ্গ করছে না। কিন্তু চারদিক থেকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠছে ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম-নীতির ধারা উপস্থাপন করে।

এ পরিস্থিতিতে জটিল এক সমস্যার মধ্যে পড়ে গেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা। সবশেষে সমস্যা সমাধানের জন্য বিকল্প পথে এগুনোর চিন্তা করছেন সংস্থাটির সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিন।

তিনি জানিয়েছেন, উয়েফার ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়মটাই বদলে দেবেন। যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল লিগ এনবিএতে অনুসরণ করা হয়, ঠিক সেই নিয়মই তারা উয়েফায় অনুসরণ করবেন। তার এই প্রস্তাব বা চিন্তাটা ডকুমেন্টস আকারে আগামী উয়েফা কংগ্রেসে উপস্থাপন করবেন বলেও জানিয়েছেন সেফেরিন।

এরই মধ্যে উয়েফা এনবিএ স্টাইলে ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম ইউরোপিয়ান ফুটবলে চালু করা যায় কি না তা নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। সেফেরিন একটা বিষয় বুঝতে পেরেছেন যে, ইউরোপিয়ান ফুটবলে ক্লাবগুলোকে টাকা খরচ করার ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়ে দিতে হবে। এখানে কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাবে না। তবে, এই স্বাধীনতা দেয়ার বিনিময়ে কিছু নিয়ম তৈরি করে দিতে চান তারা। যাতে সবাই লাভবান হয়।

টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে আলেকজান্ডার সেফেরিনের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই নতুন ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে মডেলের কথা তুলে ধরেন। যেটা তৈরি করা হবে পুরোপুরি এনবিএ’র আদলে।

এনবিএ’তে নিয়ম করা আছে, প্রতিটি দল চাইলে ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র ধরা-বাধা নিয়মে অর্থ ব্যায়ের সীমা অতিক্রম করতে পারবে। যে কারণে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা হবে না কিংবা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকেও বাদ দেয়া হবে না। তবে, যেসব দল অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করবে, তাদের ওপর করের বোঝাটা একটু বেশিই করে দেয়া হবে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া অতিরিক্ত ট্যাক্সের টাকা ভাগ করে দেয়া হবে নিচু সারির দলগুলোকে। যাতে করে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হয়।

এনবিএ’তে বেশ কয়েকটি দল নিজেদের খেলেয়োড়দের পারিশ্রমিক সীমা অতিক্রম করে যায় এবং সেই অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রদান করে থাকে। যদি এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কারণে একটি ভালো মৌসুম কাটায়, তখন সেই দলটির সামনে আর কোনো সমস্যা তৈরি হয় না। অতিরিক্ত অর্থ তাদের রিটার্ন আসে। কিন্তু মৌসুম কোনো কারণে খারাপ গেলেই বিপদ, অতিরিক্ত লগ্নি করা অর্থ আর ফিরে আসে না।

তবে ফুটবলে এই সিস্টেম কতটা কার্যকর হবে, তা অনেকটাই অপরিষ্কার। উয়েফাও এ নিয়ে রয়েছে অন্ধকারে। তবে নতুন ফাইনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’ মডেলের যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে তার বিস্তারিত হয়তো সামনে আর কিছুদিনের মধ্যেই জানা যাবে। তখন, বোঝা যাবে উয়েফা আসলে কী থেকে কী করতে চাচ্ছে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত