আজ - শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - বিকাল ৩:০৩

বন্যায় পশুর খামারিদের মাথায় হাত

খানজাহান আলী নিউজ ডেস্ক: বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় যোগাযোগ অবকাঠামো, ঘরদোর, ফসল ও শাকসবজির পাশাপাশি পশুসম্পদের ওপরও বড় আঘাত এসেছে। বিশেষ করে কোরবানির হাটের উদ্দেশ্যে যারা গবাদি পশু লালন করেছে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। দুর্গত অনেক এলাকায় পশুর প্রয়োজনীয় খাবার এখন দুর্লভ। অনাহারে কিংবা পচা খাদ্য খেয়ে অনেক পশু নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও পড়ছে। এ অবস্থায় অনেকে লোকসানেই বিক্রি করে দিতে চাইছে, কিন্তু পশু কোথাও নিতে পারছে না বন্যা বা ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে। অথচ ঈদের বেশি দিন বাকি নেই। গরুর অনেক মালিক বলেছেন, এবার কোরবানির পশুর কাঙ্ক্ষিত দাম নাও মিলতে পারে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও এ আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকার খামারি, কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে না সবুজ ঘাস। গো-খাদ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
কেউ কেউ পানির নিচ থেকে আধা পচা ঘাস তুলে এনে গরুকে খেতে দিচ্ছে। ফলে পশুর আরো বেশি রোগে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এতে অনেক মালিক কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। অনেকে বিক্রির জন্য ক্রেতাও পাচ্ছেন না।

সর্বশেষ ১৯ আগস্ট পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর টাকার অঙ্কে সামগ্রিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে ১০ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯ জেলার ১২৩ উপজেলা এবং ৬৮৮টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় গবাদি পশু বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ লাখ ৯৫ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া এবং ৮৮ লাখ ১২ হাজার হাঁস-মুরগি বন্যার কবলে পড়েছে। গবাদি পশু কিছু মারা পড়েছে। এর মধ্যে ১৩টি গরু ও পাঁচটি ছাগল মারা যাওয়ার খবর রয়েছে অধিদপ্তরের কাছে। তাদের হিসাবে ২৯ হাজার ৭১২টি মুরগি ও তিন হাজার ৬৫৩টি হাঁস মরেছে। প্লাবিত হয়েছে গবাদি পশুর ৯ হাজার ৭৫৯ একর চারণভূমি। ফলে প্রাকৃতিক খাবারের বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত গরু-ছাগল-মহিষ ও ভোড়ার জন্য এক কোটি ৯৭ লাখ ৩৬২ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। হাঁস-মুরগিতে দেওয়া হয়েছে চার কোটি ৭৫ লাখ ডোজ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সরাসরি ৯০ হাজার ৭৬৬টি গবাদি পশু ও চার লাখ ২৬ হাজার হাঁস-মুরগির চিকিৎসা দিয়েছেন। তার পরও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে পশুগুলো।

আমাদের জামালপুর প্রতিনিধি  জানান, জেলার ইসলামপুরের মশামারী গ্রামের শতাধিক পরিবারের বাস এখনো পানিতে। রাতে চোর-ডাকাতের দল নৌকা নিয়ে ঘুরঘুর করে। তাই গরুর রশি ধরে সারা রাত নির্ঘুম কাটায় বন্যার্তরা। সোমবার গভীর রাতে মশামারী গ্রামের এক রাস্তায় দেখা যায়, গ্রামের মাসুদ মণ্ডল তাঁর টঙের সঙ্গে বাঁধা প্রায় দুই লাখ টাকা দামের চারটি ষাঁড় গরুর রশি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি কালের কণ্ঠ প্রতিনিধিকে দূর থেকে দেখেই ভয়ে চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘বস্তিবাসী জাগো। গরু-বাছুর রক্ষা করো। ’ মুহূর্তেই চারদিক থেকে প্রায় ২০ জন নারী-পুরুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে ছুটে এসে ঘিরে ধরে এবং পরিচয় জিজ্ঞেস করে। দু-একজন গ্রামবাসী এই প্রতিনিধিকে চিনতে পারলে অন্যরা আশ্বস্ত হয়। তারা জানায়, চোর-ডাকাতের কবল থেকে গরু-বাছুর ও জিনিসপত্র রক্ষায় পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা বসানো হয়েছে। পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ খোঁজ নেয়নি বলেও জানায় তারা।

সেখান থেকে নৌকাযোগে চিনাডুলী ইউনিয়নের বলিয়াদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় পাহারার একই দৃশ্য। গ্রামের মাইনুল ইসলাম, আব্দুল হালিম ও গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রতি রাতে দুই-তিনবার গরু ডাকাতের দল হানা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে সোমবার রাতেই চিনাডুলী ইউনিয়নের আমতলী বাজারের কাছে রাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, একটি ব্রিজের ওপর ছয়টি সংখ্যালঘু পরিবারের ৩০ জন নারী-পুরুষ তাদের গরু-ছাগলের রশি ধরে বসে আহাজারি করছে। এলাকার আরো অনেক গ্রামে এভাবে নির্ঘুম রাত কাটাতে দেখা যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ তাদের খোঁজ নিচ্ছে না। তবে ইসলামপুর থানার ওসি তদন্ত সাদিকুল ইসলামখানজাহান আলী24.comকে বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় পুলিশের একটি টহলদল নৌকাযোগে যমুনা নদীসহ চিনাডুলী ও বেলগাছা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিয়ে থাকে।

নীলফামারী প্রতিনিধি  অনেক খামারি ও চাষির সঙ্গে সমস্যাটি নিয়ে কথা বলেছেন। জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়ালখাতা ডাঙাপাড়া গ্রামের গরুর খামারি আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৫) জানিয়েছেন, খাদ্যের সংকট হওয়ায় তিনি বিক্রি করে ফেলেছেন ছয়টি গরু। মামুন বলেন, ‘বন্যায় আবাদ করা ঘাস নষ্ট হয়েছে, খড়সহ অন্যান্য গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। গরু পালনের খরচ বাড়ায় এখন আমি লোকসানের আশঙ্কা করছি। ’ মামুন আরো বলেন, ‘মোটাতাজাকরণের জন্য গত মার্চ মাসে ২৬টি গরু কিনে পালন করছিলাম। ভালোই চলছিল খামার, মোটা অঙ্কের লাভ করার আশা ছিল। লাভের টাকায় খামারটি আরো বড় করার স্বপ্ন দেখছিলাম। বন্যা এসে বাধা হয়ে দাঁড়াল। ’ তিনি জানান, গরুর খামারের জন্য ১৮ শতাংশ জমিতে নেপিয়ার ঘাসের চাষ করেছিলেন। বন্যার পানিতে ডুবে মরে গেছে ঘাস। এখন অনেক চড়া দামে ঘাস সংগ্রহ করতে হচ্ছে। বন্যার আগে ৮০ আটি খড়ের দাম ছিল ২৫০ টাকা, এখন দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দানাদার খাবারের বস্তা (৪৫ কেজি ওজনের) ৬০০ থেকে দাম বেড়ে হয়েছে ৯০০ টাকা। ধানের কুঁড়ার দাম ৫০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০০ টাকা, প্রতি কেজি খৈল ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা, ৩৫ টাকা কেজির চিটাগুড় এখন ৪২ টাকা, ৮০০ টাকার চোপরের বস্তা হয়েছে এক হাজার ২৫০ টাকা।  ‘একদিকে বন্যার কারণে গরু পালনে খরচ বেড়েছে অন্যদিকে ভারতীয় গরু আসছে বাজারে। ঈদের আগে আরো ভারতীয় গরু আসার কথা শুনছি। ছয়টি গরু বিক্রি করে দিয়েছি। লোকসান কমানোর জন্য ঈদের বাজার শুরুর আগেই গরু বিক্রির কথা ভাবছি। ’

জেলা সদরের শাহপাড়া গ্রামের গরুর খামারি আনিছুর রহমানের (৫৫) খামারে রয়েছে ২৫টি গরু। এর মধ্যে এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য মোটাতাজা করেছেন ছয়টি গরু। তিনি বলেন, ‘সামনে ঈদ, গরুর স্বাস্থ্য ধরে রাখতে হবে। কিন্তু খাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে কুলানো যাচ্ছে না। ’ তাঁর পরিকল্পনা ছিল ২৫ হাজার টাকা দরে কেনা একেকটি গরু ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। খরচ বাদে লাভ থাকবে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় উল্টো লোকসানের আশঙ্কা করছেন আনিছুর।

জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের খামারি মাহমুদুল হাসান সোহাগ (৩৭) বলেন, ‘আমার ৩৩টি গরুর মধ্যে বন্যার আগেই ১০টি বিক্রি করেছি। ভালোই দাম পেয়েছি, এখন দাম কম হওয়ায় বাকি ২৩টি গরু বিক্রি নিয়ে সমস্যায় আছি। ক্রেতা যে দাম বলছে তাতে লোকসান হবে। আর বাইরের কোনো ক্রেতা এখনো আসছে না। ’ লোকসানের কারণ হিসেবে তিনি জানান, খাদ্যের দাম প্রায় দেড় গুণ বুদ্ধি পেয়েছে, পাশাপাশি ভারতীয় গরু বাজারে আসছে।

বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায়। বন্যার কবল থেকে বাঁচতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, আশ্রয়কেন্দ্র ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে দুর্গতরা, সঙ্গে নিয়েছে নিজেদের গবাদি পশু। এখন তারা পশুর খাবার নিয়ে পড়েছে বিপাকে। অনেকেই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া চর থেকে ঘাস এনে খাওয়াচ্ছে। এতে অসুস্থ হচ্ছে পশু, মারাও যাচ্ছে। এতে আসন্ন কোরবানিতে পশু সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও করছে কেউ কেউ। দুর্গত মানুষের অনেকেই জানায়, নিজেদের জন্য কোনো রকম মাথা গোঁজার ব্যবস্থা হলেও খোলা আকাশের নিচে থাকছে তাদের পশুগুলো। ঝড়বৃষ্টি যাচ্ছে এসব পশুর ওপর দিয়ে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা,তাঁদের কয়েকটি গরু কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে পশুগুলোকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারছেন না। তাই পশু শুকিয়ে যাচ্ছে। তিনটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ঠিকমতো খাবার দিতে না পারলে পশুগুলো মরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বাঁধে আশ্রয় নেওয়া ধুনট উপজেলার শিমুলবাড়ী গ্রামের আকবর আলী জানান, তাঁর তিনটি গরুর মধ্যে অসুস্থ হয়ে একটি মারা গেছে। অন্য দুটির অবস্থাও ভালো নয়। আগে বিভিন্ন চর থেকে ঘাস এনে গরুকে খাওয়াতেন। এখন জমি পানির নিচে থাকায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না। একই গ্রামের নান্নু মিয়া জানান, তাঁর ৫০টি ভেড়া ছিল। খাবার না পেয়ে এবং অসুস্থ হয়ে ছয়টি মারা গেছে। আরো কয়েকটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চিথুলিয়া গ্রামের দুলাল হোসেন জানান, অসুস্থ হওয়ায় তার দুটি গরু খাবার খাচ্ছে না। পশু চিকিৎসক ডেকে এনেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  জানান, শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ীতে গড়ে ওঠা মিল্ক ভিটা কম্পানিকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার গো-খামার। পাশাপাশি কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পুরো জেলায় পালন করা হয়েছে লক্ষাধিক পশু। পর পর দুই দফা বন্যায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে গো-খামারিরা। পশুখাদ্যের অস্বাভাবিক দাম। এতে খামারিরা কোরবানির হাটে বড় লোকসানের আশঙ্কা করছে। শাহজাদপুরে গো-খামারগুলোর অন্তত ৩০ শতাংশ গরু কোরবানির ঈদের জন্য লালনপালন করা হয় বলে জানা যায়। খামারিরা বলছে, নেপিয়ার ঘাসের মাঠ ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে কাঁচা ঘাসের সংকট। এ অবস্থায় অসাধু ব্যবসায়ীরা খৈল, খড় আর ভূসির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আর কাঁচা ঘাস না পাওয়ায় দুধের উৎপাদনও গেছে কমে।

শাহজাদপুরে খামারিরা গবাদি পশু নিজ বাড়িতে রেখেছে কোনো রকমে। তারা অভিযোগ করে, বন্যার সময় গবাদি পশুর নানা রোগ দেখা দিলেও প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও চিকিৎসকের সংকট দেখা দেয়। এ সময় মিল্ক ভিটা খুব একটা এগিয়ে আসে না বলে তাদের অভিযোগ। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ খামারিদের পশুখাদ্য নিয়ে সংকটে পড়ার কথা স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলে, পশুখাদ্যের দামের ব্যাপারে সরকারের নজরদারি থাকা দরকার।

এসব বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক খানজাহান আলী24.comকে বলেন, পশু ও হাঁস-মুরগির চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আঞ্চলিক চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি আরো ১৪৭টি দল সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোরবানির পশুর যে জোগান আছে তা দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব। তবে বিভিন্ন কারণে খামারি বা কৃষক হয়তো একটু কম দাম পাবে। যেহেতু পশুগুলোর খাদ্য সংকট আছে এবং তাদের স্বাস্থ্যহানি হচ্ছে।

এদিকে নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাদের বলেন, বন্যার কারণে গো-খাদ্যের দাম বাড়েনি। ঈদের আগে প্রতিবছর গো-খাদ্যের দাম বাড়ে, এবারও বেড়েছে। জেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ৫৭ একর গো-চারণভূমি নষ্ট হয়েছে। অসুস্থ এক হাজার ৪৬২ গবাদি পশু, দুই হাজার ৫৬৫ হাঁস-মুরগির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। টিকা দেওয়া হয়েছে সাত হাজার ৬১১ হাঁস-মুরগির।

সিরাজগঞ্জের মিল্ক ভিটার পরিচালক সামাদ ফকির জানান, তাঁদের জরিপ মতে এক লাখ ২৫ হাজার গবাদি পশু পানিবন্দি। মিল্ক ভিটার পক্ষ থেকে গবাদি পশুর চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন আশ্বাস দেন, খামারিদের ভর্তুকির ব্যাপারে মিল্ক ভিটাসহ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বেলকুচি উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী আকন্দ জানান, একটি বেসরকারি কম্পানি থেকে দেড় টন দানাদার খাদ্য সংগ্রহ করে পশু অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে চরাঞ্চলের খামারিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

বগুড়ার ধুনটের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুর আলম সিদ্দিকী বন্যার কারণে গরু-ছাগল-ভেড়া মারা যাচ্ছে বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পচা খড়, ঘাস ও নোংরা পানি খাওয়ার কারণে গবাদি পশুর পিপিআর নামে এক ধরনের রোগ হয়।জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শফিউজ্জামান বলেন, বন্যাদুর্গত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটে লোকজন রাখা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছে। দূষিত পানি ও পচন ধরা ঘাস বা খড় খেয়ে গবাদি পশু অসুস্থ হচ্ছে।অধিদপ্তরের হিসাবে এ বছর দেশে মোট পাঁচ লাখ ২২ হাজার ২৮৯ জন খামারির কাছে ৬১ লাখ ৭২ হাজার ৯৯০টি কোরবানিযোগ্য হৃষ্টপুষ্ট গবাদি পশু রয়েছে। এ ছাড়া বৃদ্ধ, বাতিল, অনুৎপাদনশীল ও অলাভজনক কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু আছে ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার। যার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার।

আরো সংবাদ