ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশায় আঘাত করলেও বাংলাদেশে এর প্রভাব তীব্রভাবেই পড়বে। কাল বুধবার ঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার সময় দেশের ১৪টি উপকূলীয় জেলা এবং চর ও দ্বীপে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এলাকাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ পূর্বাভাস দিয়ে দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।বিজ্ঞাপন
আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং জয়েন টাইফুন অ্যান্ড ওয়ার্নিং সেন্টারের পূর্বাভাসে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার হতে পারে। অর্থাৎ এটি অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বাতাসের গতিবেগ ৮০ থেকে ১২০ কিলোমিটার হতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াস অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ভারতে আঘাত করতে পারে। তবে বাংলাদেশের খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার এবং ঝোড়ো বাতাসের মুখে পড়বে।
এরই মধ্যে ঝড়টির প্রভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনার নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ টপকে ও ভেঙে ওই পানি প্রবেশ করছে। সুন্দরবনের দুবলার চরসহ জেলেপল্লিগুলোর বেশির ভাগ এলাকা এরই মধ্যে ডুবে গেছে।বিজ্ঞাপন
দেশের উপকূলীয় জেলাগুলো থেকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, খুলনার কয়রাসহ কয়েকটি উপজেলায় আগে থেকেই বেড়িবাঁধগুলো ভাঙা ছিল। সেখান দিয়ে এখন বসতি এলাকা এবং মাছের ঘেরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়ছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে অনেক স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। এসব এলাকার অধিবাসীরা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো উপকূলবাসীকে নিরাপদ ও উঁচু স্থানে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে।
এ ব্যাপারে ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ ও কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমাণে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে। ফলে নিচু এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।