আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - ভোর ৫:২০

কঙ্কালে রমরমা ব্যবসা, পাচার হচ্ছে বিদেশেও!

মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় কঙ্কালের ব্যবহার একটি আবশ্যকীয় বিষয়। কিন্তু দেশে কঙ্কাল সরবারহের কোন নীতিমালা না থাকায় শিক্ষার্থীদের নির্ভর করতে হচ্ছে কৃত্রিম কঙ্কালের ওপর। অ্যানাটমি বিভাগের শিক্ষকরা মনে করেন, কৃত্রিম কঙ্কাল আসল কঙ্কালের মতো না হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কবর থেকে চুরি করা কঙ্কাল নিয়ে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে আসছে একটি চক্র। যার দিকে নজর দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমি বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আঞ্জুমান বানু জানান, অ্যানাটমি বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য কঙ্কালের প্রয়োজন হয়। কিছু পড়াশোনা আছে, যা কঙ্কাল ছাড়া সম্ভব নয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে একটি করে কঙ্কাল থাকলে ভালো। কঙ্কাল কেনাবেচার ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনও বিধিমালা না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অবৈধ-বৈধ যাছাই না করেই কঙ্কাল কিনছে। যা কোন ভাবেই উচিৎ নয়।

সম্প্রতি ময়মনসিংহের আর কে মিশন রোডে কোতোয়ালি থানার পুলিশ একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ১২টি মাথার খুলি ও দুই বস্তা মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধার করার পর বিষয়টি নজরে আসে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, চক্রটি প্রথমে কবর থেকে লাশ তুলে নির্জন স্থানে রাসায়নিক ও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে কঙ্কাল আলাদা করে। পরে তুলে দেয় পাচারকারীর হাতে। তাদের মাধ্যমে এই কঙ্কাল চলে যায় মেডিক্যাল শিক্ষার্থী এবং পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভারতে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য বলছে, দেশে কঙ্কাল ব্যবসার মূল হোতাদের একজন বাপ্পি। তার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের যোগসাজশ আছে। এই কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের কাছে কঙ্কালের চাহিদা পাওয়ার পর এই চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে চড়া দামে তাদের হাতে কঙ্কাল পৌঁছে দেয়।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, একটা আস্ত কঙ্কাল কিনতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ পড়ে। কৃত্রিম কঙ্কাল শিক্ষার্থীরা ১৫-২০ হাজার টাকা দিয়ে সংগ্রহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পর থেকে কঙ্কাল আর লাগে না। তখন আবার অনেকে বিক্রি করে দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিক্যাল শিক্ষা বিষয়ক ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, আমার জানামতে দুটি দান করা কঙ্কাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আছে। এমন দানের সংখ্যা খুব কম। কঙ্কাল বেচাকেনার কোনও নীতিমালা না থাকায় কঙ্কাল নিয়ে বাণিজ্য করার সুযোগ পায় পাচারকারী চক্র।

আরো সংবাদ