আজ - মঙ্গলবার, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি, (বসন্তকাল), সময় - সকাল ১০:২৯

কথাবার্তা সাবধানে বলা উচিত, মির্জা ফখরুলকে কাদের

তোফায়েল আহমেদ:  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাবধান এবং শালীন হয়ে কথা বলতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি আজকে ২১ আগস্টের ঘটনায় হতাশ। তারা এখন গিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ওপর কথা বলছে। সরকারের সংশ্লিষ্টতার তথাকথিত অভিযোগ তুলছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব, কথাবার্তা সাবধান হয়ে বলা উচিত। শালীনতার সীমারেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। দায়িত্বশীলতার অতিরিক্ত কথা বলা কোনো রাজনৈতিক নেতার উচিত নয়।

আপনি কিন্তু বেসামাল বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন।’

আজ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের কাচপুরে চট্টগ্রাম-সিলেট সংযোগ সড়কের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর আদালতের একটি পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে তৎকালীন রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় ওই হত্যাকাণ্ড হয় বলে জানিয়েছিলেন আদালত। গতকাল সেই পর্যবেক্ষণের কথা তুলে ধরে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গ্রেনেড হামলায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড যদি রাষ্ট্রযন্ত্রের হয়, তাহলে বর্তমান সরকারের আমলে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, হলি আর্টিজান এবং জঙ্গি হামলায় নিহত বিদেশি কূটনৈতিক ব্যবসায়ী, এনজিও কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, যাজক, পুরোহিত, ব্লগার হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের দায় ক্ষমতাসীনদের ওপরই বর্তায়। কিন্তু রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।’ তাঁরই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের পিলখানা হত্যাকাণ্ডেও বিএনপিকে দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘হত্যাকারীদের ২১ আগস্টের মতো এখানেও পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে বিএনপির নির্ধারিত একটা নেতৃত্ব, নির্ধারিত একটা টিম। আমি পরিষ্কার এবং স্পষ্টভাবে বলতে চাই কে দায়ী, আদালতের রায়ে সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে। বিচারকার্য সম্পাদিত হয়েছে। এতগুলো মামলা, বিচার হয়েছে। কেউ প্রশ্ন তোলেনি।

আমি ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আপনার কাছে জানতে চাই, ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায় আপনার নেত্রী বাড়ি ছেড়ে কোথায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টায় হারানো বিজ্ঞপ্তির পর্যায়ে তিনি ছিলেন। কেন? ওইদিন প্রকৃত হত্যাকারীকে বিএনপি পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। এটা আমার সাজানো কথা নয়। কিন্তু আপনার নেত্রী কেন, যিনি ১১টার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি পালিয়ে গেলেন?’

এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এ আজিজকে নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন বিএনপির মুখে বিষ ছাড়া আর কিছু নেই। গলার জোড়, মুখের বিষ, সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। এটাই হচ্ছে এই মুহূর্তের বাস্তবতা। দেখুন অবশেষে তাদের মুখের বিষ এসে পড়েছে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতীক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধানের মতো স্পর্শকাতর পজিশন, এখানেও তাদের মুখের বিষ ঝড়ে পড়ছে। তাঁরা এখানেও হাত দিয়েছে এবং তাদের এক থিংক ট্যাংকের নেতা সেনাপ্রধানকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি।’

এদিকে, এ বিষয়ে আজ রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরে আবার স্লিপ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন। কিন্তু এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ রকম স্পর্শকাতর জায়গায়, আঘাত করা না জেনে না শুনে। অসত্য, মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য সেনাপ্রধান সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এর জন্য বিএনপিকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।’

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ওবায়দুল কাদের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে নির্মাণাধীন দ্বিতীয় সেতুর প্রাঙ্গণে যান। এরপর তিনি কাঁচপুর সেতুর তলদেশ দিয়ে নির্মিত চট্টগ্রাম-সিলেট সংযোগ সড়ক উদ্বোধন করেন

আরো সংবাদ