আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৪৯

ঝড় তীব্র না হলেও বড় ক্ষতির ঝুঁকি উপকূলে

বছর ঘুরলেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ধাক্কা এখনও সামাল দিতে পারেননি উপকূলবাসী। দুর্যোগ আসে-যায়, সাগরপাড়ের অসহায় মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই যেন থামতেই চায় না। প্রকৃতির রোষে বারবার ‘উদ্বাস্তু’ হওয়াই যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে উপকূলবাসীর। গত বছরের মে মাসে ইয়াসের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছিল সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁধ ভেঙে দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষেতের ফসল-বাড়িঘর ডুবেছিল অথৈ নোনা জলে। ফের সব হারানোর ভয়। উপকূলজুড়ে চেপে বসেছে ‘আসানি’ আতঙ্ক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রাবন্দর ও কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা আশার পাশাপাশি শোনাচ্ছেন শঙ্কার কথাও। তারা বলছেন, আসানির তেজ ধীরে ধীরে কমছে। বর্তমান গতিবিধি অনুসারে ঝড়টি আজ মঙ্গলবারের মধ্যে ভারতের অল্প্রব্দপ্রদেশ-ওডিশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। স্থলভাগে আঘাত হানার আশঙ্কা খুবই কম। ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে ঝড়টি আগামী দু’দিনের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত আর জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যেতে পারে উপকূলের বাড়িঘর। বরিশাল ও নোয়াখালী অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-সাত ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। কক্সবাজার এলাকায় ধসে পড়তে পারে পাহাড়।

বদলাচ্ছে গতিপথ, প্রভাব পড়বে উপকূলে :যতই উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, ততই সমুদ্রের চেহারা বদলে যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, ঘূর্ণিঝড় কোনো উপকূলে আছড়ে না পড়লেও সমুদ্র ফুঁসে উঠবে। তার জেরে হতে পারে জলোচ্ছ্বাস।

এখনও বাংলাদেশ উপকূল থেকে ‘আসানি’ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকলেও ঝড়ের কেন্দ্র থেকে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ ভেসে এসেছে। এর প্রভাবে গতকাল সোমবার বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রামসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বৃষ্টি হয়েছে। সাগর রয়েছে উত্তাল। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকত তীরে। শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি খানিকটা উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত এর গতিমুখ ভারতের অল্প্রব্দ উপকূলের দিকে আছে। তবে আজ মঙ্গলবার তা আরও খানিকটা দিক বদলাতে পারে। শেষ পর্যন্ত ঝড়টি কোন দিক ধরে উপকূলের দিকে এগোবে, তা আজ দুপুর নাগাদ বলা যাবে। এমনকি ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে বঙ্গোপসাগরেই বিলীন হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ছানাউল হক ম ল বলেন, ঝড়টি বাংলাদেশ বা ভারত যে দেশের দিকে মুখ করে এগিয়ে আসুক না কেন, তা কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

আরো সংবাদ