আজ - বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - বিকাল ৫:২২

তারেক রহমানের ‘ড.কামাল হত্যা’ মিশনে দাউদ ইব্রাহিম!

নাইমুর রহমান দূর্জয় : সংলাপে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের অনড় অবস্থান বিবেচনা করে এবং আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয়ের ব্যাপারে শঙ্কিত হয়ে এবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনকে হত্যা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান।

এই কাজের জন্য দুবাইয়ে অবস্থানরত আন্ডারওয়াল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের সহায়তা নিচ্ছেন তারেক। দাউদের ভাড়া করা কিলারদের মাধ্যমে ড. কামালকে হত্যা করে নির্বাচনের পূর্বে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারকে চাপে ফেলতেই এমন ভয়ংকর পলিটিক্যাল কিলিংয়ের মিশন হাতে নিয়েছেন তারেক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক দুবাই থেকে আগত তিন কিলারের বরাতে এই তথ্যের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। মূলত এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে প্রবেশকালে এয়ারপোর্টে একাধিক ব্যক্তির উপর সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় তাদের নজরদারিতে রেখেছিল গোয়েন্দা বাহিনী। গোয়েন্দা সূত্রের খবরে সম্ভাব্য দুর্ঘটনার বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরেই অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে গোপন বৈঠককালে পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত দুবাই নিবাসী তিনজনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ও তিনটি অত্যাধুনিক ট্র্যাকিং ডিভাইস ও ড. কামালের তিনটি ছবি জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটককৃতরা হলেন, জাদরান মালিক, মাওলানা হাকিম ও নাজিবুল্লাহ গালিব। আটকৃতদের কাছ থেকে জব্দকৃত অত্যাধুনিক ডিভাইসগুলো দেখে হতবাক হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ এরকম অত্যাধুনিক ডিভাইস পূর্বে বাংলাদেশে দেখা যায়নি। জানা গেছে, ড. কামালের হত্যার মিশনটি সফল করতে তারা গত এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে আসেন এবং নাজিমউদ্দিন রোডের একটি বাসায় ওঠেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রুপটির প্রধান জাদরান মালিক জানান, তারা ঢাকার স্থানীয় ফাইভ স্টার গ্রুপের সাথে মিলে ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামালকে হত্যা করার জন্য দুবাই থেকে এসেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে জাদরান আরো জানান, দুবাইতে দাউদ ইব্রাহিম তাদের বুঝিয়ে দেন যে যেকোন মূল্যেই ড. কামালকে হত্যা করতে হবে। ড. কামালকে হত্যা করতে তাদের স্থানীয় ফাইভ স্টার গ্রুপের একাধিক সদস্য সাহায্য করবেন। ড. কামালকে হত্যা করলে দাউদ ইব্রাহিমের কাছের মানুষখ্যাত তারেক রহমান রাজনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন। ড. কামালকে হত্যা করতে পারলে বর্তমান সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে ফেলতে সক্ষম হবেন তারেক রহমান। তাই ড. কামালকে হত্যা করতে তিনি দাউদ ইব্রাহিমের শরণাপন্ন হন। এই কাজের জন্য তিনি দাউদ ইব্রাহিমকে ১ মিলিয়ন ডলারও দিয়েছেন। তবে শর্ত ছিল ড. কামালের হত্যাকাণ্ডের মিশনে বিএনপি বা জামায়াতের কোন নেতার সাহায্য নেওয়া যাবে না। তাই আমরা দুবাই থেকে ঢাকার কিলারগ্যাং নামে পরিচিত ফাইভ স্টার গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করে মিশন সফল করার জন্য বাংলাদেশে আসি। কথা ছিল ফাইভ স্টার গ্রুপ আমাদের সহায়তা করবে। ড. কামালকে হত্যা করার জন্য উপযুক্ত স্থান ও পরিবেশ নির্ধারণ করতে আমরা এরই মধ্যে কয়েকদিন তাকে ফলো করি। আমরা ৬ নভেম্বর সমাবেশ শেষে ফেরার পথে ড. কামালকে অতর্কিত হামলা করে হত্যার মিশনটি ফাইনাল করি। মিশনটি সফল হলে সরকারের উপর ড. কামালের হত্যার দায় চাপিয়ে দিতে পারত বিএনপি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে বিএনপিকে বাঁচাতে ড. কামালকে বলি দিতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান। পলিটিক্যাল কিলিং করে পলিটিক্যাল বেনিফিট নিতে চেয়েছিলেন তারেক। এছাড়া ড. কামাল বিএনপির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান। বিএনপিকে ড. কামালের পাতানো জাল থেকে উদ্ধার করতে তাকে হত্যা করে সরকারের উপর দায় চাপিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনরোষের মুখে ফেলে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন তারেক রহমান।

এদিকে আটক তিনজন বিদেশি কিলারের প্রাথমিক তথ্যে চিন্তিত হয়ে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনের পূর্বে সত্যিই যদি ড. কামালের মত গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে হত্যা করা হতো তাহলে দেশে আগুন জ্বলে উঠত। ২০১৪ সালের ন্যায় আবারো সারাদেশে বিশৃঙ্খলার মিশনে নেমে পড়ত স্বার্থান্বেষী মহল। তাই নির্বাচনের পূর্বে ড. কামালসহ সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতাদের সব ধরনের নিরাপত্তা ও সহায়তা দিতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দেশে যেন নতুন করে কোন পলিটিক্যাল কিলিংয়ের ঘটনা না ঘটে এবং নির্বাচন যাতে করে সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণে সম্পন্ন করা যায় সেই বিষয়ে বিশেষ জোর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটককৃতরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছে, স্থানীয় আরো দুটি কিলার গ্রুপও এই মিশনের সাথে জড়িত থাকতে পারে। তবে তাদের ব্যাপারে কোন কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাই বিগত ১৫ দিনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যারা বাংলাদেশে এসেছেন তাদেরকেও গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

আরো সংবাদ