ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এবার যশোরের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর নামের তালিকা ঠিক করা হবে তৃণমূল থেকে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে তিনজন প্রার্থী বাছাই করে তাদের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এ ধরনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে। দলের পক্ষে দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্তে খুশি তৃণমূলের নেতারা।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য সংগঠনের সব জেলা ও মহানগর শাখাকে তৃণমূলের রেজুলেশন পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। নির্বাচন কমিশন আগামী ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে ২০টি জেলার ৬৩টি উপজেলার তিনশ’ ২৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ খবর ইতিমধ্যে যশোরের নেতারা অবগত হয়েছেন। এ ব্যাপারে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এ সিদ্ধান্ত সময়পোযোগী বলে উল্লেখ করে তৃণমূল পর্যায়ের জটিলতা লাঘব হবে বলে জানান তিনি।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ধাপে সারাদেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করবে। এতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সুনির্দিষ্ট গঠনতান্ত্রিক বিধিমোতাবেক তৃণমূলের রেজুলেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রথম ধাপে তিনশ’২৩টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২৮(৩)(ঙ) অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীদের প্যানেল তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীদের একটি প্যানেল সুপারিশের জন্য কেন্দ্রে প্রেরণ করবে।
সুপারিশকৃত প্যানেলটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের যুক্ত স্বাক্ষরে নির্বাচন কমিশন ঘোষিতব্য তফসিলে উল্লেখিত তারিখের আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠাতে হবে।’ প্রার্থী প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক কমপক্ষে তিন জনের নামের প্রস্তাব করতে হবে। নির্বাচনী আইন, নীতিমালা ও বিধিমালা অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নামের সাথে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য, প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং রাজনৈতিক পরিচিতি সংবলিত একটি সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দলের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, এতদিন দলীয় মনোনয়ন এলোপাতাড়িভাবে দেয়া হতো। নিয়মকানুন থাকলেও তা শতভাগ ফলো করা হতো না। তা এবার নিশ্চিত হবে বলে তিনি মনে করেন। শহিদুল ইসলাম মিলনের দাবি, এই প্রক্রিয়ায় তৃণমূলের যোগ্য নেতারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাবেন।