দেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জাতীয় কারিগরি কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী দুই-এক দিনের মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। শনিবার মানিকগঞ্জের গড়পাড়া শুভ্র সেন্টারে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন যানবাহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার নির্দেশনা আসছে।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ শপিংমল গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার বিষয়টি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়ম না মানলে দেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে সংক্রমণের হার অতিমাত্রায় বাড়লে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। যা আগের চেয়ে ৪০০ গুন বেশি। এর ফলে রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন যানবাহনে বিশেষ করে বাস, লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার নির্দেশনা আসছে।দুই-একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, পাশ্ববর্তী দেশসহ অনেকস্থানেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তবে সংক্রমণের হার অতিমাত্রায় বাড়লে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় চিকিৎসার জন্য দেশের হাসপাতাল গুলোকে পুনরায় প্রস্তত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো ওমিক্রনও মেকাবেলা করা হবে। তবে ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী হলে সমস্যা তৈরি হবে। তাই করোনায় যাতে আক্রান্ত হতে না হয় এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই এখনো দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। কল-কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে। এই পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দোকান পাটে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার না করলে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়কে জেলা জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, ওমিক্রণে যুক্তরাজ্যে এক লক্ষ ও আমেরিকাতে চার লক্ষ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে। আমাদের দেশে এই অবস্থা আমরা চাই না। আমাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রাথমিকভাবে মাক্স আমাদের সংক্রমণ ঝুঁকি কমাবে। সংক্রমণের হার যেভাবে বাড়ছে, স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়ে আমরা কঠোরতা অবলম্বন করব।
সারা দেশে নির্বাচন হচ্ছে, বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এতে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মো. যোবায়ের, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার, সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।