আজ - শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - দুপুর ১:০৯

ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর আকিকা করলেন গোয়ালন্দের ওসি

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে জন্ম দিয়েছে এক পুত্র সন্তান। ওই শিশু সন্তানকে শরীয়া অনুযায়ী আকিকা সম্পন্ন করলেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান।

বৃহস্পতিবার গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শগ্রাম মহল্লার ওই অসহায় শিশুর আকিকার আয়োজন করেন ওসি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটির মায়ের বাবার বাড়িতে আকিকার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

জানা যায়, ধর্ষণের শিকার হয়ে শিশু জন্ম দেওয়া স্কুলছাত্রীর বাবা একজন হত দরিদ্র রিক্সা চালক। কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় আয়-রোজগার তেমন একটা করতে পারেন না। তার মা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন।

স্থানীয়রা জানান, ধর্ষণে অভিযুক্ত দুই সন্তানের জনক ইয়াসিন মন্ডল (৪০) আট মাস আগে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানি করতো সে। এক পর্যায়ে শিশুটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে ইয়াসিন। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ জুন এই স্কুলছাত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।

অভিযুক্ত ইয়াছিন মন্ডল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের মৃত নবু মন্ডলের ছেলে। পেশায় কাঠমিস্ত্রি ইয়াসিন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।

এদিকে যৌনকর্মীর মৃত্যুর পর জানাজা পড়িয়ে দাফনের ব্যবস্থা, ওসিকে ‘স্যার’ সম্বোধন বন্ধ, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত গ্রামে গাছতলায় ‘জনগণের দরবার’ বসিয়ে অফিস করার পর এবার ধর্ষণের শিকার হয়ে শিশু মায়ের জন্ম দেওয়া সন্তানের আকিকা অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রশংসায় ভাসছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. আশিকুর রহমান।

এ সকল কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসিকে একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে দেখছেন। তার এমন মহৎ ও মানবিক উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই শিশু মায়ের জন্ম দেওয়া সন্তানকে নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমি অসহায় ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এলাকার গণ্যমান্যদের সঙ্গে আলাপ করে সবার সহযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ছেলে সন্তানের আকিকা সম্পন্ন করেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’- বাংলাদেশ পুলিশের এই স্লোগান বাস্তবে রূপ দিতে হলে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। এ জন্য পুলিশ-জনতার দূরত্ব কমিয়ে আনা খুব জরুরি, এই উপলব্ধি থেকেই নিয়মিত দায়িত্ব পালন ছাড়াও কিছু মানবিক কাজ করার চেষ্টা করছি।’

আরো সংবাদ