নড়াইলে দীপ্ত সাহা হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো যশোর পিবিআই পুলিশ।
গত ২৪ ফেব্রয়ারী বিকাল ৫ ঘটিকার সময় দীপ্ত সাহা ২২, পিতা-দীনবন্ধু সাহা, সাং-হোগলাডাঙ্গা, থানা-নড়াইল সদর, জেলা-নড়াইল নিজ বাড়ি হতে পার্শ্ববর্তী হোগলাডাঙ্গা পূর্বপাড়া আড়ংখোলায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখার কথা বলে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল সহ বের হয়ে যায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি ১১.৩০ ঘটিকার সময় নড়াইল সদর থানাধীন হোগলাডাঙ্গা গরানের মাঠ হাজরাতলা মহাশ্মশ্বানের উত্তর পার্শ্বে উত্তম বিশ্বাসের লীজকৃত মাছের ঘেরে পানির মধ্য হতে দীপ্ত সাহা (২২) এর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে পিবিআই, যশোর ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থল পরিদর্শণসহ ছায়া তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। পিবিআই যশোর জেলা পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম- নেতৃত্তে¡ পিবিআই, যশোর ক্রাইমসিন টিম ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শামীম মুসা, সঙ্গীয় এসআই রেজোয়ান ও গোলাম আলীসহ যশোর জেলার চৌকস দল ছায়া তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস, আকাশ রায় দীপ্ত সাহা হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত সন্দেহ হলে তাদেরকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সময়ে তাদের নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ৪.০৫ ঘটিকার সময় নড়াগাতী থানাধীন বিলাহর মাঠে সবুর এর কলাই ক্ষেত থেকে ভিকটিম মৃত দীপ্ত সাহা এর খোয়া যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত স্বীকার করে। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নড়াইল সদর থানার মামলা নং-২৬, তারিখ-২৬/০২/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪/৩৭৯/৪১১ পেনাল কোড রুজু হয়।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই পুলিশ জানতে পারে, আসামী সুমন সরকার, সজীব কুমার, আকাশ রায় ও ভিকটিম দীপ্ত সকলেই মাদকাসক্ত। তারা একসাথে বসেই মাদক সেবন করতো। আসামী সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ^াস ও আকাশ রায়’দের টাকা প্রয়োজন হলে তারা ভিকটিম দীপ্তকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আসমীরা দীপ্তকে মোবাইল করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে।দীপ্ত ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা দীপ্তকে গাঁজা সেবনের উদ্দেশ্যে গাঁজা বানাতে দেয়। দীপ্ত গাঁজার মসলা বানাতে ব্যস্ত থাকাকালে আসামী আকাশ ও সজীব দীপ্তর গলায় পেছন থেকে নাইলোনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দড়ির এক প্রান্তে আকাশ ও অপর প্রান্তে সজীব টেনে ধরে দীপ্তর মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত দীপ্তর পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি বের করে নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পুকুরে দীপ্তর মৃতদেহ ফেলে দেয়। এরপর আসামী আকাশ ও সজীব আসামী সুমনকে মোবাইল ফোন করে জানায় যে, তারা দীপ্তকে মেরে ফেলেছে, দীপ্তর মোটরসাইকেলে তেল কিনার জন্য টাকার প্রয়োজন। আসামী সুমন টাকার ব্যবস্থা করছি বলে ফোন কেটে দেয়। আসামী সজীব ও আকাশ ভিকটিম দীপ্ত এর মোটরসাইকেল নিয়ে বারইপাড়া খেয়াঘাট পার হয়ে কালিয়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে ৫০ টাকার তেল ভরে অপর পলাতক আসামি সজিবের এর নিকট মোটরসাইকেল বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে রেখে আসে। আসামী সজিব ও আকাশদ্বয় ভিকটিমের মোটরসাইকেলটি আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বদির নিকট রয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। আসামী সকলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টাসহ মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।