পাশবিকতা রোধেই ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘পশুত্ব বেড়ে গেলেই মানুষ ধর্ষক হয়ে ওঠে। এই পাশবিকতার বিস্তার রোধে আমরা আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করেছি। যেহেতু এখন পার্লামেন্ট চলছে না, তাই এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এভাবে যেকোনো সংকটজনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় আলোচিত ধর্ষণ প্রসঙ্গ ছাড়াও করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন সফলতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসবে। এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতিও আছে। বিভিন্ন সময়ে সাফল্যের সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ড। এর মধ্য দিয়ে সাতশর বেশি নদী প্রবাহিত। এই জায়গায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে জান-মাল বাঁচানো, মানুষকে সতর্ক রাখাটাই বড় কাজ। আমাদের ৫৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন। এর মধ্যে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরাও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।’
‘একটা সময় দেশে অনেক অবহেলিত, অনগ্রসর মানুষ ছিলো’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজে যাদের কোনো স্থান ছিলো না। বলতে গেলে তারা ছিলো অপাঙক্তেয়। আমরা কিন্তু তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদের ঠিকানা হয়েছে। আমরা হিজড়া থেকে শুরু করে সবাইকে স্বীকৃতি দিয়েছি। সমাজে এখন তাদের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। আপনারা জানেন, চা শ্রমিকদের অন্য দেশ থেকে আনা হয়েছিলো। তাদের কোনো দেশ ছিলো না, ঠিকানা ছিলো না। বঙ্গবন্ধু তাদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন।’
দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলে ব্যাপকহারে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, দুর্যোগ সহনীয় ঘরবাড়ি তৈরি করার মতো কার্যক্রম আমরা বাস্তবায়ন করছি। আমরা ড্রেজিং করে, খাল খননের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। কারণ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে দেশের সার্বিক উন্নয়নই আামাদের লক্ষ্য। আমাদের জলাধার, নদী-নালা, খাল-বিলের প্রবাহ যেন বন্ধ না হয়। এগুলো ঠিক না থাকলেই কিন্তু জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।’