আজ - সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ৪:০৫

প্রতি মাসে পাঁচজন দরিদ্রকে খাওয়ানোর সাজা দিলেন বিচারক

সাজা হিসেবে প্রতি মাসে কমপক্ষে পাঁচজন হতদরিদ্রকে দুপুরের খাবার খাওয়াতে হবে। এছাড়া দেখতে হবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

এ ধরনের সাতটি শর্ত মানা সাপেক্ষে এক বছরের জন্য মাদক মামলার এক আসামিকে মুক্তি দিয়ে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস।

ওই আসামির নাম আলমগীর। তিনি যশোরের শার্শা উপজেলার রাড়িপুকুর গ্রামের মৃত রজব আলী গাজীর ছেলে। আলমগীর এক বছর সাজা খাটবেন বাড়িতে থেকে।

আদালত সূত্র জানায়, আসামিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থাকতে হবে। কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সবার সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যেকোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্যে প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে।

এছাড়া কোনো প্রকার মাদক সেবন-বহন ও সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা করতে পারবেন না। একই সঙ্গে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে সার্বিক অবস্থা অবহিত করতে হবে।

প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। প্রবেশনকালীন তাকে ‘একাত্তরের যীশু’, ‘নদীর নাম মধুমতি’, ‘হুলিয়া’, ‘প্রত্যাবর্তন’, ‘পতাকা’, ‘আগামী’, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা’, ‘ধুসর’, ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ ও ‘শরৎ একাত্তর’ এসব চলচ্চিত্র দেখতে হবে। একই সঙ্গে তাকে রোপণ করতে হবে ১০টি বৃক্ষ।

যুগ্ম দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের এপিপি লতিফা ইয়াসমিন বলেন, মামলায় আটকের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে আলমগীর হাজিরা কামাই দেননি। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনো মামলাও নেই। তবে দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস যশোরে যোগদানের পর থেকে আসামি পুনর্বাসনের জন্য একের পর এক ব্যতিক্রমী রায় দিয়ে যাচ্ছেন। আসামিদের পুনর্বাসনের জন্য এ ধরনের রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি জানান।

২০০৮ সালে ১৯ জুন রাত সাড়ে ৭টায় যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া থেকে ৯ বোতল ফেনসিডিলসহ আলমগীরকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা হয়।

আরো সংবাদ