যশোর শহরের সার্কিট হাউজপাড়ার কামরুজ্জামান শুকুর হত্যার অভিযোগে করা মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছে আদালত। থানা থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের উপর রোববার শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী তাজউদ্দিন আহম্মেদ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, কামরুজ্জামান শুকুর ওরফে বাবু ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আসামিরা সরকারি এমএম কলেজের আসাদ হলে প্রায় সময় মদ, ফেনসিডিল ও ইয়াবার আসর বসাতো। আসামিরা শুকুরকে ওই সকল মাদকের সরঞ্জামাদি এনে দিতে বলতো। শুকুর রাজি না হওয়ায় তারা তার উপরে ক্ষিপ্ত হয়। ফলে আসামিরা শুকুরকে হত্যার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে শুকুরকে এমএম কলেজের আসাদ হলের মধ্যে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। এরপর পেপসির বোতল, জিআই পাইপ, লোহার রডসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র দিয়ে মারপিট করে। এরপর আসামিরা শুকুরের হাঁটুর উপর ড্রিল দিয়ে ছিদ্র, প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলে। আসামিরা শুকুরকে মৃত্যু ভেবে ফেলে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুকুর মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর নিহতের পিতা মতিয়ার রহমান বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলো, যশোর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান ফন্টু চাকলাদার, জেলা ছাত্রলীগের তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, সাধারণ সম্পাদক সাল সাবিল আহম্মেদ জিসান, যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলন, শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করীম রোডের তৌহিদ, খড়কী হাজামপাড়ার বর্ষন, মিশনপাড়ার রাজিব, শার্শা উপজেলার সাড়াতলা গ্রামের রাশেদ ও মাগুরার শালিখা উপজেলার নাগোসা গ্রামের নুর ইসলাম নাহিদ। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়েছিল কিনা কোতয়ালি থানার ওসিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক। প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগটি পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।